ইসরাইলি বর্বর আগ্রাসনে জর্জরিত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। রাক্তাক্ত উপত্যকাটির পাশে বসে একরকম নির্ভার দিন পার করছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ সৌদি আরব। টন টন বোমা ফেলে যখন ষড়যন্ত্র চলছে ফিলিস্তিনকে ভৌগোলিকভাবে মানচিত্র থেকে মুছে দেয়ার, তখনই আগ বাড়িয়ে নিজেদের পাঠ্যবই থেকে মুছে দেয়া হলো ফিলিস্তিনের নাম।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাতে উঠে এসেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদির পাঠ্যবইয়ে গত পাঁচ বছরে কী ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে তা নিয়ে বিস্তর এক গবেষণা করেছে ইম্প্যাক্ট-সি নামে ইসরাইলি একটি এনজিও ও পর্যবেক্ষক সংস্থা।
২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত সৌদি আরবের সাড়ে তিনশোর বেশি পাঠ্যবই পর্যালোচনা করে কী কী বাদ দেয়া, পরিবর্তন করা এবং কোন বিষয়গুলো রাখা হয়েছে তা বিস্তারিত জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইম্প্যাক্ট-সি আরও জানায়, সৌদির দ্বাদশ শ্রেণির সামাজিক শিক্ষার বইয়ে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বর্ণবাদী বলে উল্লেখ ছিল। সেই বইটি ২০২৩ সাল থেকে পড়ানো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আরেকটি বই এখনো পড়ানো হচ্ছে তবে সেটি থেকে পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়েছে ফিলিস্তিনি আন্দোলনের বিষয়টি।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, ২০২২ সালে পঞ্চম ও নবম শ্রেণির সামাজিক শিক্ষা বইয়ে মানচিত্রে ফিলিস্তিনের নাম রাখা হলেও পরে এটি মুছে ফেলা হয়। রাখা হয়নি ইসরাইলের নামও। বেশিরভাগ পাঠ্যবই থেকে সৌদির সঙ্গে সীমান্ত নেই এমন দেশের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে ফিলিস্তিনও রয়েছে। শুধু তাই নয়, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা এবং ভূগোল বই থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে প্রাচীন ফিলিস্তিনের মানচিত্র।
গত কয়েক বছর ধরেই সৌদি আরবের গবেষকরা দেশটির পাঠ্যবইগুলোতে নারী-পুরুষের ভূমিকা থেকে শুরু করে শান্তি ও সহিষ্ণুতার বার্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে ধারাবাহিকভাবে কিছুটা উদারতার ইঙ্গিত পাচ্ছেন।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইসরাইলের মধ্যে কূটনীতিক সম্পর্ক সৃষ্টির সম্ভাবনা, ইহুদি ও খ্রিষ্ট ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যে অব্যাহত সংঘাতসহ কিছু জটিল ও সংবেদনশীল বিষয়ে সৌদি পাঠ্যপুস্তকের বর্ণনার পরিবর্তন সবার মনোযোগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।