চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল লড়াইটা শুধু মাঠে ফুটবলারদের নয় বরং ডাগ আউট থেকে টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যাল দ্বৈরথ চলবে দুই কোচের মাঝেও। অভিজ্ঞতা ও পরিসংখ্যানে যোজন যোজন এগিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তাকে সম্মান রেখেই বরুশিয়া ডর্টমুন্ড কোচ এডিন টারজিক অবশ্য ফাইনালটা জয়ের প্রত্যাশা রাখলেন। ম্যাচটা কঠিন হলেও ওয়েম্বলি থেকে শিরোপা নিয়ে ফিরতে চায় জার্মান ক্লাবটি।
ফুটবলটা এখন শুরু একটা খেলাই নয়, বরং হয়ে উঠেছে দর্শন। আর তার দার্শনিক হলেন প্রতিটা দলের কোচ। মাস্টার মাইন্ডের পরিবর্তনের সঙ্গে যেমন পরিবর্তন আসে খেলার ধরনে তেমন নতুন নতুন কৌশলও যুক্ত হয়। তেমনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের দ্বৈরথটা ফুটবলার ছাপিয়ে হয়ে উঠতে পারে ডাগ আউটের।
দুই ডাগআউটের চিত্রটা একেবারে ভিন্ন। রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি এ দুনিয়ায় সবচেয়ে অভিজ্ঞ। শুধু রিয়ালের হয়েই নয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞা তার রয়েছে অন্য ক্লাবের হয়েও। তাই তার সঙ্গে নিশ্চয়ই তুলনা চলে না বরুশিয়া ডর্টমুন্ড কোচ এডিন টারজিকের।
ফুটবল দার্শনিক আরিগো সাচ্চির শিষ্য কার্লো আনচেলত্তি কতটা ভয়ঙ্কর কোচ তার বুঝা যায় কোচিং ক্যারিয়ারের দিকে তাকালেই। ডাগআউটে চুইনগাম চিবাতে চিবাতে চূর্ন করে দিতে পারেন প্রতিপক্ষের সব কৌশল। ঠান্ডার মাথার খুনি বললেও ভুল হবে না। তাইতো ইতালিয়ান ফুটবল মস্তিষ্ককে নিয়ে এভাবেই স্তুতি ঝরলো বরুশিয়া ডর্টমুন্ড কোচের কন্ঠে।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে টারজিক বলেন, ‘আমি কিছু দিন আগেও বলেছিলাম। কার্লো আনচেলত্তিকে আমি সর্বোচ্চ সম্মান করি। তিনি এমন একজন কোচ যিনি শুধু একটা দলের হয়ে নয়, বরং বিভিন্ন দলের হয়ে, ভিন্ন ভিন্ন দেশের হয়ে, ভিন্ন সংস্কৃতির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছে। আর এটি শুধু ২-৩ বছর নয়, বরং ২ দশক ধরে তা সফলতার সঙ্গে করে আসছে। আমার মনে হয় তিনি যেভাবে দলকে পরিচালনা করেন, ফুটবলাররা তার জন্য যেভাবে খেলে, তিনি অবশ্যই সবার রুল মডেল। ইয়াং কোচদের অনুকরণীয়। আমি নিজেও তার একজন ভক্ত।’
তবে ম্যাচটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। তাই ছেড়ে কথা বলার সুযোগ কই। ৪১ বছর বয়সী টারজিক চান ওয়েম্বলি থেকে এবার শিরোপা নিয়ে ফিরতে। তার জন্য সর্বোচ্চ কৌশলের ব্যবহার করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু ফাইনাল খেলতে আসিনি, শিরোপা জিততে এসেছি। ওয়েম্বলিতে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে ট্রফি জেতা হবে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি। আশা করি ফুটবলাররা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলবে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য।’
আনচেলত্তির কৌশল কিংবা পরিকল্পনা বোঝার উপায় নেই কারও। তারপরও রক্ষণাত্মক মনোভাব ইউসিএল ফাইনালের আগে। জার্মান ক্লাবটা এখন পর্যন্ত মাদ্রিদিস্তাদের বিপক্ষে ১৪ ম্যাচে মাত্র ৩বার জয় পেয়েছে। তারপরও প্রতিপক্ষকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না রিয়াল কোচ।
আনচেলত্তি বলেন, ‘এ ধরনের ম্যাচ খেলা একাট বিশেষ অনুভুতি। মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ফুটবল বিশ্বে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ যা হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক ওয়েম্বলিতে। এটা সত্যি অসাধারণ অনুভুতি। এখানে খেলতে পেরে আমি সত্যি আনন্দিত। আশা করি ছেলেরা তাদের সেরা ফুটবল খেলবে।’
রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো অ্যানচেলত্তি জয় পেলে কোচিং ক্যারিয়ারে ৫ম ইউসিএল শিরোপা জিতবেন। অন্যদিকে এডিন টারজিকের হবে প্রথম।
শনিবার (১ জুন) রাত রাত ১ টায় ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলিতে মুখোমুখি হবে রিয়াল-বরুশিয়া।