ফৌজদারি অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আদালত তার বিরুদ্ধে অন্যায় রায় দিয়েছেন। এ ছাড়া নিউইয়র্ক আদালতের জুরি বোর্ডের সভাপতিত্বকারী বিচারক জুয়ান মার্চানকে শয়তান আখ্যা দেন তিনি।
নিজের যৌন কেলেঙ্কারি ঢাকতে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ট্রাম্প।
শুক্রবার (৩১ মে) নিউইয়র্কে নিজ ভবন ট্রাম্প টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলন করে সেই রায়ের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। বলেন, কোনোভাবেই তিনি পিছপা হবেন না। কারণ তার বিরুদ্ধে অন্যায় রায় দিয়েছেন আদালত। তার নির্বাচনী প্রচারণাও অব্যাহত থাকবে।
বিচার প্রক্রিয়ায় তার নির্বাচনী বিশেষজ্ঞদের সুযোগ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, তার সাক্ষীদের এমনভাবে বিচারক নাজেহাল করেছেন যেন মনে হবে তাদের ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময় তিনি বিচারক জুয়ান মার্চানের সমালোচনা করে বলেন, তিনি দেখতে একজন দেবদূতের মতো, কিন্তু আসলে একজন শয়তান।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, ট্রাম্পের জেল বা জরিমানা অথবা একসঙ্গে দু’টি সাজাই হতে পারে। যে মামলায় তাকে ‘অপরাধী’ ঘোষণা করা হয়েছে, মার্কিন আইন অনুযায়ী তাতে সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ চার বছরের জেল।
নিউইয়র্ক আদালতের জুরি বোর্ডের সভাপতিত্বকারী বিচারক জুয়ান মার্চান। ‘অপরাধীদের কঠোর সাজা’ দেয়ার জন্য তার পরিচিতি রয়েছে। তবে আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এক্ষেত্রে ৭৭ বছরের রিপাবলিকান নেতাকে শুধু জরিমানা দিয়েই ছাড় দিতে পারেন আদালত।
কারণ, প্রথমত তার বয়স। দ্বিতীয়ত, অপরাধের ধরন ‘অহিংস’ এবং তৃতীয়ত, এটাই তার প্রথম অপরাধ। তাছাড়া দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ায় ট্রাম্পের প্রতি জুরি ‘বাড়তি সহানুভূতি’ দেখাতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
আগামী ১১ জুলাই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ রায় দেবেন নিউইয়র্কের অপরাধ আদালত। এর মাত্র চার দিন পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন দেবে রিপাবলিকান পার্টি। এমন বাস্তবতায় ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করে দেয়া আদালতের রায়ে কি হবে? তিনি কী জেলে যাবেন নাকি তাকে জরিমানা করা হবে? এ বছরের নভেম্বরে হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এর কেমন প্রভাব পড়বে–এসব প্রশ্ন এখন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।