গত মৌসুম শেষে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে বুন্দেসলিগার জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন হ্যারি কেন। প্রথম মৌসুমে ক্লাবের হয়ে কিছুই জিততে পারেননি এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। দীর্ঘ ১১ বছর পর লিগ জিততে পারেনি তারা। এ জন্য অনেকেই হ্যারি কেনকে অপয়া অপবাদ দিলেও ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে সেরা মৌসুম কাটিয়েছেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
টটেনহ্যাম হটস্পারের হয়ে দারুণ ফুটবল উপহার দিলেও শিরোপা জিততে পারেননি হ্যারি কেন। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়েও এখন পর্যন্ত জিততে পারেননি শিরোপা। ক্লাব ফুটবলে ১৫ বছর কাটিয়ে দলেও এখনও শিরোপার স্বাদ পাননি হ্যারি কেন। তাই তো গত মৌসুম শেষে বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন তিনি। আগের ১১ মৌসুমে যারা একটানা জিতেছে বুন্দেসলিগার শিরোপা।
কথায় বলে, অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে যায়। হ্যারি কেন বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেয়ার পর প্রথম মৌসুমে লিগ জেতা তো দূরের কথা তৃতীয় হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। ঘরোয়া কাপ বা চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও ব্যর্থ দলটা। যে কারণে হ্যারি কেনকেই অপয়া বলছেন অনেকেই।
হ্যারি কেন অবশ্য বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে গোলমেশিনে পরিণত হয়েছেন। চলতি মৌসুমে বুন্দেসলিগায় মুড়িমুড়কির মতো গোল করেছেন তিনি। ইউরোপের সেরা অন্য তিন লিগে ৩৮ ম্যাচের লিগ হলেও বুন্দেসলিগায় তা ৩৪ ম্যাচের। চার ম্যাচ কম খেলার সুযোগ পেয়েও ইউরোপের শীর্ষ গোলদাতা হয়েছেন হ্যারি কেনই। ফলে জিতে নিয়েছেন ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট।
৩২ ম্যাচে ৩৬ গোল করেছেন হ্যারি কেন। অন্য কোন খেলোয়াড়ের এই মৌসুমে ৩০ গোলও নেই। বড় ব্যবধানে বাকিদের পেছনে ফেলেছেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। এবারই প্রথম ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জিতলেন তিনি।
আরও অনেক রেকর্ডের মতোই সবচেয়ে বেশিবার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জেতার রেকর্ডটাও লিওনেল মেসির দখলে। ক্যারিয়ারে মোট ছয়বার ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন মেসি। ২০০৯-১০, ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ মৌসুমে ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে তিনি গোল্ডেন বুট জেতেন। সর্বোচ্চ ৫০ গোল করে গোল্ডেন বুট জয়ের রেকর্ড আছে মেসির। শীর্ষ পাঁচ লিগে এটিই সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড।
মেসির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চবার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জিতেছেন মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। মোট চারবার ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। ২০০৭-০৮ সালে প্রথমবার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জেতেন তিনি। সেবার তিনি জেতেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে। এরপর রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়ে ২০১০-১১, ২০১৩-১৪ (যৌথভাবে) ও ২০১৪-১৫ মৌসুমে এই পুরস্কার জেতেন তিনি।
এছাড়া মোট ১০জন খেলোয়াড় দুইবার করে এই পুরস্কার জিতেছেন। যে তালিকায় আছেন জার্ড মুলার, ইউসেবিও, থিয়েরি অঁরি, দিয়েগো ফোরলান, লুইস সুয়ারেজ ও রবার্ট লেভানদোভস্কির মতো তারকা।
ক্লাবের হিসেবে সবচেয়ে বেশি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জিতেছেন বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা। তিনজন খেলোয়াড় মিলে আটবার গোল্ডেন বুট বার্সেলোনায় নিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে এক মেসির হাত ধরেই ছয়বার গোল্ডেন বুট এসেছে বার্সেলোনায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচটি গোল্ডেন বুট জিতেছেন বায়ার্ন মিউনিখের খেলোয়াড়রা। এদের মধ্যে জার্ড মুলার ও রবার্ট লেভানদোভস্কি মিলেই জিতেছেন চারবার। এছাড়া রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা চারবার জিতেছেন গোল্ডেন বুট। যার মধ্যে তিনটি রোনালদো একাই জিতেছেন।