Homeসর্বশেষ সংবাদরৌমারীতে অবৈধ ভাবে নদীর স্রোতধারা বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ বালু ব্যবসা রমরমা

রৌমারীতে অবৈধ ভাবে নদীর স্রোতধারা বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ বালু ব্যবসা রমরমা

শাহ মোঃ আব্দুল মোমেন,রৌমারী(কুড়িগ্রাম)।।

কুড়িগ্রাম জেলার উপজেলার দঁাতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাউনিয়ার চর হলহলিয়া নদীর মাঝখানে বাঁধনির্মাণ করে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ স্রোতধারা বন্ধ করেছে বালু ব্যবসায়ীর একটি চক্র।

এই রাস্তা দিয়ে অবৈধভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে ট্রাক্টর (কাকড়া) দিয়ে যাতায়াত করছে। দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। শুধু কাউনিয়ার চরে নয়, জানা গেছে উপজেলার হলহলিয়া নদীর বিভিন্ন ̄স্থানে এভাবে নদীর বুকে বালি এবং মাটি ফেলে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। নাব্যতা হারিয়ে প্রায় বিলীন হয়ে যাবার পথে উপজেলার হলহলিয়া, সোনাভরি ও জিঞ্জিরাম নদী।

অপর দিকে নদীতে রাস্তা নির্মাণ করায় উত্তর দিক থেকে আসা পানি আটকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একারনে উত্তর দিকে শতাধিক একর জমির বোরো ধান পানির নিচে ডুবে যাচ্ছে। আবার রাস্তার দক্ষিণ দিকে পানির অভাবে বোরো ধান শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। পাশাপাশি মাছের স্বাভাবিক চলাফেরা বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এতে উভয় পাশের কৃষকরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতির সম্মখিন হচ্ছেন।

এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে বারবার অবগত করা হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। হতাশায় ভোগছেন ওই এলাকার মানুষ। পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে উপজেলার প্রধান নদী হলহলিয়া অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে। ভেকু মালিক মতিয়ার, আব্দুল হান্নান ও বাবু মিয়া তারা নদী গতিপথ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করে বালুর ব্যবসা পরিচালিত করছে।

জানা গেছে রৌমারী উপজেলা ভয় কোনও বালু মহল না থাকলেও ব্রহ্মপুত্র, সোনাভরি, হলহলিয়া ও জিঞ্জিরাম নদীর কাউনিয়ার চর, চরশৌলমারী, মিয়ারচর, পাখিউড়া, মুখতলা, বলদমারা, বাইটকামারী, ফলুয়ার চর, বাঘমারা, ধনারচর পশ্চিমপাড়া, লালকুড়া, লাঠিয়ালডাঙ্গা সহ বিভিন্ন স্থানে নদীর গতিপথ বন্ধ করে বালু উত্তোলন করছে। বালু ব্যবসায়ীরা বলছেন তারা জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের একটি অংশের সাথে কথা বলেই নদীর গতিপথ বন্ধ করেছেন।

ভেকুর মালিক ও বালু ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান বলেন, স্থানীয় প্রশাসন, চেয়ারম্যান
মেম্বারদের সাথে আলাপ করেই নদী ভরাট করে রাস্তা বানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হারুন ওর রশিদ হারুন জানান, নদী যারা বন্ধ করে তারা খুব প্রভাবশালী। বাঁধ দেওয়ার ফলে ধীরে ধীরে নদীটি মরে যাবে। তখন তারাই আবার অবৈধভাবে দখল করবে। এই কাজটি তারা দীর্ঘমেয়াদী নদী দখলের পরিকল্পনা করেই করছেন।

দঁাতভাঙ্গা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য আবু সাইদ জানান, রাস্তা নির্মাণে আমি বাধা দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার কোন বাধায় মানে নাই।

দঁাতভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম রেজাউল করিম বলেন, রাস্তা নির্মাণের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার কাছে কেউ অভিযোগ দেইনি। তবে নদীতে বাধ নির্মাণ করা সম্পুর্ন অবৈধ। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

উপজেলা মৎস কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এবিষয়ে আমি কিছু জানিনা। নির্বাচনী কাজে বাহিরে আছি। নদীর স্রোতধারা বন্ধ করা বেআইনি। এতে মাছের স্বাভাবিক চলাফেরা বাধাসৃষ্টি হয়। আমি রৌমারীতে এসেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ।

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান জানান, নদীর বুকে রাস্তা নির্মাণ করার বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে খুব শীঘ্রই সরেজমিনে তদন্ত করে এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

Exit mobile version