ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ গাজার রাফায় শরণার্থীশিবিরে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ভয়াবহ বিমান হামলাকে ‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি এ ঘটনার তদন্ত করা হবে বলেও জানান।
গাজা উপত্যকার রাফায় ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষিত একটি শরণার্থীশিবিরে রোববার (২৬ মে) বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী। তাঁবু দিয়ে গড়ে তোলা ওই শরণার্থীশিবিরে দখলদার সেনাদের হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত, আর প্রায় আড়াইশ জন আহত হয়েছেন।
রাফায় এ হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠেছে। এটিকে হত্যাযজ্ঞ আখ্যা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান। ইসরাইলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে ‘সামর্থ্যের মধ্যে সবকিছু’ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। হামলার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। রাফায় ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনো নিরাপদ জায়গা নেই উল্লেখ করে অবিলম্বে সেখানে ইসরাইলি অভিযান বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘রাফায় অভিযান বন্ধে ইসরাইলকে অবশ্যই আইসিজের আদেশ মেনে চলতে হবে।’ এছাড়া হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব।
রাফার শরণার্থীশিবিরে হামলায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে দায়সারা জবাব দিয়েছেন নেতানিয়াহু। সোমবার (২৭ মে) ইসরাইলি পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে তিনি এ হামলাকে ‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেন। এর তদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘গাজায় বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষার জন্য সম্ভাব্য প্রত্যেকটি বিষয়ে সতর্ক থাকা ইসরাইলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
তবে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য পূরণের আগে এই যুদ্ধ বন্ধের কোনো ইচ্ছা তার নেই।’
এদিকে, গাজায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরডব্লিউবি)। তাতে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। আরডব্লিউবি বলেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে চলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত কমপক্ষে ৯ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ইসরাইলি বাহিনীর যুদ্ধাপরাধের শিকার হওয়ার অভিযোগ তদন্তে তারা আদালতে আবেদন করেছে।