ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার জন্য দুই মাস আগে জিহাদ হাওয়ালাদা ওরফে কসাই জিহাদকে কলকাতায় নিয়ে যান এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জান শাহীন। ভারতের গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ এ কথা স্বীকার করেছেন।
সিআইডির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ জানায়, দুই মাসে আগে এমপি আনারকে হত্যার জন্য তাকে কলকাতায় আনে আখতারুজ্জান শাহীন। খুনের সময় আরও ৪ জন বাংলাদেশি ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন। কিলিং মিশন শেষে মরদেহ টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে গুম করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, নারীর প্রলোভোন দেখিয়ে ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় এমপি আনারকে। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ৫ কোটি টাকার চুক্তি হয় বলে জানায় সংবাদ মাধ্যমটি।
এদিকে শুক্রবার (২৪ মে) কসাই জিহাদকে নিয়ে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের খণ্ডিত লাশ উদ্ধারে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযানে নামে ভারতের গোয়েন্দা পুলিশ। কলকাতার অদূরে কাশিপুর থানার ভাঙ্গরের বগজোলা খালে নেমে চালানো হয় ব্যাপক তল্লাশি।
এসময় পুরো এলাকা ঘিরে রাখে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। উৎসুক জনতা ভিড় করলেও তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। তবে আড়াই ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েও খণ্ডিত অংশের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জিহাদ যে জায়গা চিহ্নিত করেছিল সেখানে কিছুই পাওয়া যায়নি। সম্ভবত সে ইচ্ছে করেই ভুল জায়গা দেখিয়েছে বলে ধারণা তাদের। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতভর কৃষ্ণমাটি এলাকায় চলে অভিযান।
এমপি আনার হত্যায় জড়িত অভিযোগে কলকাতায় গ্রেফতার জিহাদ হাওলাদারকে শুক্রবার বারাসাতের আদালতে তোলে সিআইডি। আবেদন করা হয় ১৪ দিনের রিমান্ডের। কিন্তু শুনানির পর ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। জানা গেছে, খুলনার বারাকপুরের ছেলে জিহাদ অবৈধভাবে মুম্বাইয়ে বসবাস করতো। পেশায় সে একজন কসাই।
অন্যদিকে সময় সংবাদের সরাসরি প্রশ্নের মুখে পড়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদ। তবে কোনো প্রশ্নেরই জবাব দেননি তিনি।
শুক্রবার আদালতে তোলার সময় রাস্তায় সময় সংবাদের মুখোমুখি হন জিহাদ। এ সময় তিনি গাড়ির মধ্যে বসা ছিলেন। সময় সংবাদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়, কেন, কার নির্দেশে তিনি এমপি আনারকে খুন করেছেন। কিন্তু এসব প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।
জিহাদের বাড়ি খুলনা জেলায়। তাকে প্রশ্ন করা হয়, খুলনায় তার বাড়িতে কে কে আছেন, তার বাবা কি করেন, কে তাকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু একটা প্রশ্নেরও জবাব দেননি জিহাদ। বরং গাড়ির মধ্যে চুপ করে বসে ছিলেন।