ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মধ্যেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে আরও বেশ কয়েকটি দেশ। সর্বশেষ ইউরোপের তিন দেশ আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়ে বুধবার (২২ মে) ঘোষণা করেছে, তারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে।
একই সঙ্গে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বাকি দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তাদের এই স্বীকৃতিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন অনেকে। দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে বড় পদক্ষেপ বলেও মন্তব্য করছে কোন কোন দেশ।
সৌদি আরবও এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা এক বিবৃতিতে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নরওয়ে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ডের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার ইতিবাচক সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় সৌদি।
জর্ডান জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনের দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা রাখবে। এক সংবাদ সম্মেলনে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, আমরা এই সিদ্ধান্তকে মূল্যায়ন করি এবং এটিকে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করি।
এদিকে ফ্রান্স জানিয়েছে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়াটা প্যারিসের জন্য কোনো ‘ট্যাবু’ নয় ঠিকই তবে এখনই এটি করার সময় নয়। এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে এএফপি।
জার্মানিও ফিলিস্তিনের দ্বিরাষ্ট্র সমাধানে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। বার্লিনে একটি নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র জার্মান পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম লক্ষ্য। তবে এর জন্য আরও আলোচনা প্রয়োজন।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন করে ইউরোপের এই তিনটি রাষ্ট্রের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়াটা তাৎপর্যবহ দুটি কারণে এক. ‘মোমেন্টাম ও টাইমিং।’ এর মধ্যদিয়ে অন্য দেশগুলোও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে এগিয়ে আসবে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।
দুই. এই সময়ে আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেনের ঘোষণাটি গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) যা ঘটছে সেই কারণেও তাৎপর্যপূর্ণ।
নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলি নেতাদের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন জানিয়েছেন আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান। যা নিয়ে এই মুহূর্তে পুরো বিশ্ব তোলপাড়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই পদক্ষেপ অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজার ওপর ফিলিস্তিনিদের সার্বভৌমত্বের অধিকারেরও স্বীকৃতি। এছাড়া এর মধ্যদিয়ে ইসরাইল গাজায় যা করছে তা জবাবদিহিতার আওতায় আনার পথ খুলে গেল বলেও মনে করা হচ্ছে।