টাকার অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি কিনতে পারছে না চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। অথচ সিটি করপোরেশন এবং পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছেই ১২৭ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে রয়েছে সংস্থাটির। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের কাছেই বকেয়া প্রায় ৬৪ কোটি টাকা।
চট্টগ্রামের ১৩টি সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রতি মাসে ১৬ কোটি ১১ লাখ ৩৩ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিক্রি করছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে দীর্ঘদিন ধরে ১২৭ কোটি ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে সংস্থাটির। অথচ প্রতি মাসেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি কেনা বাবদ কোটি কোটি টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় জ্বালানি কিনতে না পেরে সংকটে পড়েছে পিডিবি।
চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর মজুমদার বলেন, চট্টগ্রাম জোনের বকেয়ার সিংহভাগই (প্রায় ৯০ শতাংশ) সরকারি প্রতিষ্ঠানের। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর এ বকেয়ার জন্য পিডিবি নতুন করে জ্বালানি কিনতে পারছে না।
পিডিবির বকেয়া তালিকা অনুযায়ী, সিটি করপোরেশনের কাছে সবচেয়ে বেশি বকেয়া রয়েছে ৬৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এরপরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাবে ৩০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া পুলিশ, রেলপথ, জনস্বাস্থ্য বিভাগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন পৌরসভার কাছে রয়েছে কোটি কোটি টাকা বকেয়া।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আগের মেয়র এই বকেয়া রেখে গেছেন। বর্তমান সময়ে কোনো ধরনের বকেয়া রাখার অভ্যাস সিটি করপোরেশনের নেই। আগের মেয়রের সময়ে প্রায় ৮০ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া ছিল। যেখান থেকে অনেক টাকাই আস্তে আস্তে শোধ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
সরকারি বকেয়া আদায়ের ক্ষেত্রে অনেকটা ব্যর্থ হলেও বেসরকারি বিল আদায়ে অনেকটা কঠোর অবস্থানে পিডিবি। বিশেষ করে আবাসিক সংযোগে প্রিপেইড মিটার সিস্টেম হওয়ায় সেখানে কোনো বকেয়া থাকছে না। আর বাণিজ্যিকগুলোতে বিল বকেয়া থাকলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। এ অবস্থায় বকেয়া বন্ধে আবাসিকের মতো সরকারি সংস্থাগুলোতেও প্রিপেইড সিস্টেম চালুর পরামর্শ ব্যবসায়ীদের।
পিএইচপি অটোমোবাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ বলেন, পোস্টপেইডের জায়গায় সব খাতেই প্রিপেইড মিটার চালু করলে এ ধরনের ভোগান্তির শিকার হতে হবে না। যার প্রয়োজন পড়বে নিজ দায়িত্বে আগে থেকেই টাকা ভরে খরচ করতে পারবে।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতিদিন ২ হাজার ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে পিক আওয়ারে ১ হাজার ৪০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে।