শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।।
দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন বগুড়ার শেরপুর পৌরসভার মেয়র জানে আলম খোকা। একই সাথে পৌরসভার প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজের সুবিধার্থে ১নং প্যানেল মেয়র নাজমুল আলম খোকনকে মেয়রের আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।
এছাড়াও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরোজ মুজিব ও ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফিরোজ উদ্দীন আহমেদ জুয়েলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
১২ মে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত একাধিক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পৌর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ।
প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলার শেরপুর পৌরসভার মেয়র জনাব মোঃ জানে আলম খোকা এর বিরুদ্ধে উক্ত পৌরসভার দোকান বরাদ্দের নামে অর্থ আত্মসাত, বিধি বহির্ভূতভাবে বাস টার্মিনালের ২০২০ এবং ২০২১ সালের ইজারা মওকুফ, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে মাষ্টাররোলে কর্মচারী নিয়োগ, জীপ গাড়ী মেরামতের নামে অতিরিক্ত বিল পরিশোধ, পৌর কিচেন মার্কেটের ২২৮টি দোকান বরাদ্দ প্রদান না করা, পৌরসভার বিভিন্ন ক্রয়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম, পৌরসভার গৃহকর এসেসমেন্টে দুর্নীতি, ইমারত ও ভূমির উপর অতিরিক্ত কর আদায় সংক্রান্ত আনীত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩১ এর উপ- ধারা (১) অনুযায়ী তাঁকে বগুড়া জেলার শেরপুর পৌরসভার মেয়রের পদ হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পৌরসভার প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজের সুবিধার্থে প্যানেল মেয়র-১ কে পৌরসভার মেয়রের আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।
একই সাথে ধুনট মোড়ে দোকান ঘর বরাদ্দ ও জমি লীজের ৭ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরোজ মুজিব ও ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফিরোজ উদ্দীন আহমেদ জুয়েলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরোজ মুজিব বলেন, “আমার ও পূর্ববর্তী মেয়র আব্দুস সাত্তারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ২০২০ সালে দোকান ঘর ও জমি লিজ দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে প্রতিবেদনও দাখিল করেছি। আমি অর্থ আত্মসাতের সাথে যুক্ত নই।”
এবিষয়ে ফিরোজ উদ্দীন আহমেদ জুয়েলের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানে আলম খোকা বলেন,”আইনগত প্রতিকারের জন্য আদালতের স্মরণাপন্ন হবো।”
উল্লেখ্য, শেরপুর পৌরসভার সান্যালপাড়া এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হক লুলু ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ২১টি বিষয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন অনিয়ম–দুর্নীতির বিষয় তুলে ধরেন। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য রাজশাহী বিভাগের স্থানীয় সরকার পরিচালকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে কিছু অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় তাকে কেন বরখাস্ত করা হবে না জানতে চেয়ে ২৭ মার্চ কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছিলো তদন্ত কমিটি।