রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু সের্গেই শোইগুকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভের নাম প্রস্তাব করেছেন তিনি। রোববার (১২ মে) রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে পুতিন এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ৬৮ বছর বয়সী শোইগু ২০১২ সাল থেকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পুতিন এবার তাকে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ থেকে প্রকাশিত কাগজপত্রে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে সের্গেই শোইগুর স্থলাভিষিক্ত হবেন উপ-প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভ। টানা দুই বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ করছেন এবং শোইগু সেই যুদ্ধে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন।
রাশিয়ার সরকারি কাগজপত্রে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন চান নিকোলাই পাত্রুশেভের কাছ থেকে শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব নিক শোইগু। তবে পাত্রুশেভের নতুন পোস্ট কী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সের্গেই শোইগু রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত। পুতিন যখন তার জন্মভূমি সাইবেরিয়ায় মাছ ধরতে যান, তখন প্রায়ই তার মাছ শিকারের সঙ্গী হন শোইগু। তার সামরিক অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও পুতিন তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শোইগু ১৯৯০ সালে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
গত বছর ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ভাড়াটে যোদ্ধা গোষ্ঠী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান প্রিগোজিনের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন শোইগু। সে সময় প্রিগোজিন তাকে ‘বয়স্ক ক্লাউন’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, শোইগুর স্থলাভিষিক্ত হতে যাওয়া বেলোসভের অল্পবিস্তর সামরিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবেই বেশি পরিচিত।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুতিন সম্ভবত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় আন্দ্রেই বেলোসভের দ্বারস্থ হয়েছেন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, একজন বেসমারিক ব্যক্তিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া নিঃসন্দেহে নতুন আবিষ্কার।
প্রেসিডেন্ট পুতিনের মনোনীত অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদের জন্য ভ্লাদিমির কোলোকোল্টসেভ, জরুরি পরিস্থিতি মন্ত্রীর জন্য আলেকজান্ডার কুরেনকভ, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য সের্গেই লাভরভ এবং বিচারমন্ত্রীর জন্য কনস্ট্যান্টিন চুইচেঙ্কো।