একাধিক চমক রেখে কোপা আমেরিকার দল ঘোষণা করেছে ব্রাজিল। ইনজুরি থেকে সেরে না ওঠায় দলে নেই সেলেসাওদের প্রাণভোমরা নেইমার জুনিয়র। ইনজুরির কারণে রাখা হয়নি রিচার্লিসনকেও। তবে কোচ দরিভাল জুনিয়র সবচেয়ে বড় চমক দিয়েছেন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরোকে বাদ দিয়ে।
২০১১ সাল থেকে ব্রাজিলের নিয়মিত মুখ ক্যাসেমিরো। আর গত ৭ বছরে ইনজুরির কারণ ছাড়া তিনি কখনো দল থেকে বাদ পড়েননি। সবশেষ ২০১৭ সালে মে মাসে সে সময়ের কোচ তিতে তাকে স্কোয়াড থেকে বাদ দিয়েছিলেন। তাও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ঝুঁকি এড়াতে দলের কয়েকজন তারকাকে বিশ্রামে রেখেছিলেন।
কিন্তু এবার ইনজুরির সমস্যা না থাকলেও লাতিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নেই দলটির অন্যতম ভরসা ক্যাসেমিরো। কারণটা অবশ্য তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সিতে চলতি মৌসুমে সাদামাটা পারফরম্যান্সের জন্যই কোপা আমেরিকার দলে জায়গা হয়নি এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের।
শুক্রবার (১০ মে) সংবাদ সম্মেলনে ক্যাসেমিরোর বাদ পড়া প্রসঙ্গে কোচ দরিভাল বলেন, ‘ক্যাসেমিরোর সঙ্গে তিন মাস আগে ম্যানচেস্টারে আমার কথা হয়েছিল। তাকে বলেছি, আমি তার সম্পর্কে, তার দলের পরিস্থিতি সম্পর্কে কী চিন্তা করছি এবং আমার কী প্রয়োজন। তার মানে এটা নয় যে, সব ঠিকঠাক হচ্ছে না দেখে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে।’
ক্যাসেমিরোর মতো একজন খেলোয়াড় দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা খুব ভালো করেই জানেন দরিভাল। তাই এখন বাদ পড়লেও ভবিষ্যতে যেন আবার স্কোয়াডে জায়গা করে নিতে পারেন, সেজন্য তার সঙ্গে কথা বলবেন সেলেসাও কোচ।
দরিভাল বলেন, ‘সে খুব ভালো করেই জানে, আমি তার সম্পর্কে কী চিন্তা করি। সেটাই আসল। কাল ঠাণ্ডা মাথায় আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করব। ভবিষ্যতে কী হতে পারে মূলত সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। বিশেষ করে কারণ সে এমন একজন খেলোয়াড় যে বিবেচনা, ভালোবাসা ও সম্মান পাওয়ার যোগ্য।’
এদিকে স্ট্রাইকার রিচার্লিসন অবশ্য পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েননি। ক্লাবের হয়ে খেলার সময় পায়ের পেশিতে তিনি চোট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দরিভাল।
তিনি বলেন, ‘রিচার্লিসন পায়ের পেশিতে চোট পেয়েছে। বিষয়টি এখনও ক্লাব আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি, তবে আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম এবং সে আমাদের জানিয়েছে।’
দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়ার পর দরিভালের অধীনে গত ২৪ মার্চ ইংল্যান্ড ও ২৭ মার্চ স্পেনের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল ব্রাজিল। দুই প্রীতি ম্যাচের স্কোয়াড থেকেই মূলত ২৩ জনকে বেছে নিয়েছেন ৬২ বছর বয়সী এ কোচ। অবশ্য ওই দুই প্রীতি ছিলেন না ২৭ বছর বয়সী ডিফেন্ডার গুইলহারমে অ্যারানা ও ২৪ বছর বয়সী এভানিলসন।
কোপা আমেরিকার স্কোয়াড নিয়েই আগামী ৯ জুন মেক্সিকো ও ১৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। ২১ জুন পর্দা উঠবে কোপা আমেরিকার। ২৫ জুন কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আসরে যাত্রা শুরু করবে ব্রাজিল। ‘ডি’ গ্রুপে তাদের বাকি দুই প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে ও কলম্বিয়া।
ব্রাজিলের স্কোয়াড:
গোলরক্ষক: অ্যালিসন, বেনতো, এডার্সন
রক্ষণভাগ: বেরালদো, এদের মিলিতাও, ম্যাগালায়েস, মারকুইনস, দানিলো, ইয়ান কোওতো, গুইলহারমে অ্যারেনা, ওয়েনদেল
মিডফিল্ডার: আন্দ্রেস পেরেইরা, গিমারেস, ডগলাস লুইজ, জোয়াও গোমেজ, লুকাস পাকেতা
ফরোয়ার্ড: এন্দরিক, এভানিলসন, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি, রাফিনিয়া, স্যাভিও, রদ্রিগো ও ভিনিসিউস জুনিয়র।