ভারতের লোকসভা নির্বাচন চলছে। এরমধ্যেই রাহুল গান্ধিকে ‘আক্রমণ’ করে বসলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাহুলের দিকে তীর্যক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বললেন, কেন ‘আম্বানি-আদানি’ নিয়ে আর চেঁচামেচিঁ করছেন না কংগ্রেস নেতা, কেন লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে ওই ইস্যুতে চুপচাপ হয়ে গেলেন তিনি?
বুধবার (৮ মে) তেলেঙ্গানায় একটি নির্বাচনী সমাবেশ শেষে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির উদ্দেশে এই প্রশ্ন ছুড়ে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
মোদি বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে কংগ্রেসের শাহাজাদা শুধু একটা কথাই বলে আসছেন। তা হলো রাফাল ইস্যু। রাফাল ইস্যু শেষ হওয়ার পর শুরু করেছেন নতুন চেঁচামেচিঁ ‘পাঁচ শিল্পপতি’ নিয়ে। এরপর ধীরে ধীরে তিনি ‘আম্বানি-আদানি’ ইস্যু নিয়ে উঠে পড়ে লাগেন।’
“কিন্তু নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তিনি আম্বানি- আদানিকে নিয়ে চিৎকার বন্ধ করে দিলেন। আজকে আমি তেলেঙ্গানার মাটিতে দাঁড়িয়ে জানতে চাই, আম্বানিদের কাছ থেকে তারা কত টাকা নিয়েছে? আদানির কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছে? এ বিষয়ে কী কোন চুক্তি হয়েছে? কেন তিনি এত তাড়াতাড়ি আম্বানি আদানিকে নিয়ে মুখ বন্ধ করলেন? ‘জরুর ডাল মে কুচ্ছ কালা হ্যায়’ (নিশ্চয়ই কোন গোপন কারণ আছে)”, যোগ করেন নরেন্দ্র মোদি।
তিনি আরও বলেন, ‘যাদের নিয়ে আপনি পাঁচ বছর ধরে গালাগাল দিলেন, এত সহজেই তাদের বিষয়ে চুপ হয়ে গেলেন?’
মোদির এই পাল্টা আক্রমণ কেন? কারণ রাহুল বলেছিলেন, “যেখানে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২২ জন ভারতীয়কে ‘আরবপতি’ (বিলিওনিয়ার) বানিয়েছে, সেখানে কংগ্রেস এই নির্বাচনে ক্ষমতায় এলে কোটি কোটি মানুষকে ‘লাখপতি’ বানাবে।”
যেখানে দাঁড়িয়ে মোদি প্রশ্ন করেছেন, জায়গাটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তেলেঙ্গানা। কংগ্রেস শাসিত রাজ্য এটি। সম্প্রতি সেখানে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিভিন্ন সেক্টরে মোট ১২ হাজার ৪০০ কোটি রুপি বিনিয়োগের জন্য বেশ কয়েকটি এমওইউ স্বাক্ষর করেছে মোদি সরকার।
মূলত শীর্ষ শিল্পপতিদের নিয়ে বার বার কংগ্রেসের মৌখিক আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপি। তাছাড়া কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখপাত্র গৌরব বল্লভ, যিনি সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তিনি বলেছেন, ‘দলের নেতৃত্ব তাকে বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানির বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধ্য করেছিল।’
এনডিটিভিকে দেয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে গৌরব বলেন, ‘আমি একমাত্র ব্যক্তি যিনি আদানির বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলাম। কিন্তু সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (এসইবিআই) তদন্তে আদানি গ্রুপকে ছাড়পত্র দেয়ায় আমি দলের সিনিয়র নেতাদের বলেছিলাম, বিষয়টি নিয়ে আর কথা না বাড়াতে। কিন্তু তারা থামেননি।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধি ভাদ্রা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন ফুল টস খেলেন, তখন তিনি এই ধরনের অর্থহীন বিষয় নিয়ে মাতামাতি করেন। আমি তাকে চ্যালেঞ্জ করছি, চাকরি, দুর্নীতি এবং নারীর প্রতি নৃশংসতার বিরুদ্ধে ফুল টস মারার জন্য।’