রিয়াল মাদ্রিদ-বায়ার্ন মিউনিখ ম্যাচের যোগ করা সময়ের ১৩তম মিনিটের খেলা চলছিল তখন। রিয়াল এগিয়ে ২-১ ব্যবধানে। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিতে বায়ার্নকে একটা গোল করতেই হবে। এমন সময়ে রিয়ালের জালে বল জড়ান বায়ার্নের সেন্টারব্যাক ম্যাথিয়াস ডি লিট। কিন্তু বল জালে পাঠানোর আগেই অফসাইডের পতাকা তুলে ধরেন লাইনসম্যান। গোল বাতিল! কিছুক্ষণের মধ্যেই বাজে ম্যাচের শেষ বাঁশি।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে নিজেদের সর্বস্ব ঢেলে দিয়েও পরাজয়ের গ্লানি গায়ে মাখতে হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখকে। বিদায় নিতে হয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে। তার আগে রেফারির সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠেই হয়েছে এক পশলা বিতর্ক। বায়ার্নের খেলোয়াড়রা ও কোচ টুখেল মাঠেই জানিয়েছেন প্রতিবাদ। এরপর ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে গণমাধ্যমের সামনে এই ম্যাচের রেফারি সিমন মারচিনিয়াককে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখের কোচ টমাস টুখেল।
গতকাল বুধবার (৮ মে) সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বায়ার্ন মিউনিখকে হোসেলুর জোড়া গোলে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই জয়ে ফাইনালে পা রেখেছে লস ব্লাঙ্কোরা। অথচ এদিন ম্যাচের ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে ফাইনালে এক পা রেখেছিল বায়ার্ন। কিন্তু মাত্র ৩ মিনিটের ঝড়ে রিয়াল গল্পটাই পাল্টে দেয়। দুই লেগ মিলে ৪-৩ গোলের এগ্রিগেটে ফাইনালে ওঠে রিয়াল। তবে ডি লিটের গোলটা বাতিল না হলে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়াত। ফলাফল তখন অন্যদিকেও মোড় নিতে পারতো।
ম্যাচ শেষে তাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বায়ার্নের কোচ টুখেল। টি-এনটি স্পোর্টসকে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের সর্বনাশ করেছেন লাইনসম্যান ও রেফারি। তাদের সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছি বলে মনে হচ্ছে। দারুণ লড়াই হয়েছে। আমরা আমাদের সবটুকু মাঠে ঢেলে দিয়েছি। (ফাইনালের) খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখন রিয়ালকে শুভকামনা জানানো ছাড়া কী আর করার!’
এখানেই থামেননি টুখেল। সংবাদ সম্মেলনেও ধুয়ে দিয়েছেন রেফারিকে, ‘দুঃখ প্রকাশ করে এখন আর কী হবে। সবার সর্বোচ্চটা দিতে হয়েছে, ভুগতে হয়েছে। কোনো ভুল করার সুযোগই ছিল না। সুতরাং রেফারিকেও সেরা মানের হতে হবে। যা ঘটেছে এরপর আর অজুহাত দিয়ে লাভ নেই। আপনি সেরা বলেই মাঠে। তাই আপনার সেরাটা আশা করাটা আমাদের অধিকার।’
যার গোল বাতিল হয়েছে, সেই ডি লিখটও মেনে নিতে পারেননি হারটা। টিএনটি স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘নিয়মটা মনে হয় আমাদের সকলেরই জানা। অফসাইড হয়ছে কি-না, সেটা নিশ্চিত না হলে খেলা চালিয়ে যেতে হবে। এটাই নিয়ম। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটাই লজ্জার মনে হয়েছে। হোসেলুও গোল করার সময় প্রায় অফসাইড পজিশনে ছিলেন, কিন্তু তখন খেলা চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের বেলা কেন নয় তবে? ’
তবে বায়ার্ন মিউনিখের অজিহাত মানতে নারাজ রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। রেকর্ড পঞ্চম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা এই ইতালিয়ান বলেন, ‘মুভটা একেবারেই স্পষ্ট। লাইনসম্যান পতাকা দেখিয়েছে, রেফারি বাঁশি বাজানো মাত্র আমরা খেলা থামিয়ে দিয়েছি। তারা এটা নিয়ে অভিযোগ করলে আমরাও নাচোর বাতিল হওয়া গোলটি নিয়ে অভিযোগ করতে পারি।’