মৌসুমের শুরুতে ছিলেন ইনজুরিতে। এরপর ফিরলেও সূর্যকুমার যাদবকে সেরা ছন্দে পাওয়া যাচ্ছিল কই! ফলাফল দলের তলানিতে পড়ে থাকা। প্লে-অফের সমীকরণ গাণিতিকভাবে টিকিয়ে রাখতেও এখন প্রতিটি ম্যাচে জয় চাই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের। এমন সমীকরণের সামনে জ্বলে উঠলেন টি-টোয়েন্টির শীর্ষ ব্যাটার। সূর্যের তেজে পুড়ে ছারখার হলো সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
সোমবার (৬ মে) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৭ উইকেট ও ১৬ বল হাতে রেখে হারিয়েছে স্বাগতিক মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। এদিন আগে ব্যাট করা হায়দরাবাদ ট্রাভিস হেডের শুরু ও শেষে ট্রাভিস হেড ও প্যাট কামিন্সের ঝড়ে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান করে। জবাবে সূর্যকুমার যাদব দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মুম্বাইকে জয় এনে দেন।
এই জয়ে ১২ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে রানরেটে গুজরাট টাইটান্সকে পেছনে ফেলে নয় নম্বরে উঠেছে মুম্বাই। ফলে প্লে-অফের আশা গাণিতিক মারপ্যাঁচে টিমটিম করে জ্বলছে হার্দিক পান্ডিয়ার দলের।
এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নামা হায়দরাবাদকে ঝড়ো সূচনা এনে দেন ট্রাভিস হেড। পাওয়ার প্লেতে অভিষেক শর্মার উইকেট হারিয়ে ৫৬ রান তোলে হায়দরাবাদ। ১৬ বলে ১১ রান করেন অভিষেক। ওপেনিং জুটি ভাঙার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। ট্রাভিস হেড ৩০ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ৪৮ রান করে আউট হয়ে যান।
মিডল অর্ডারে নিতিশ কুমার (১৫ বলে ২০) ও মার্কো ইয়ানসেন (১২ বলে ১৭) পান দুই অঙ্কের রানের দেখা। এছাড়া শাওহবাজ আহমেদ করেন ১০ রান।
হায়দরাবাদ লড়াই করার পুঁজি পায় মূলত শেষের দিকে নেমে খেলা অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ঝড়ো ইনিংসের কারণে। মাত্র ১৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কার মারে ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক।
মুম্বাইয়ের পক্ষে হার্দিক পান্ডিয়া ও পীযুষ চাওলা ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। বাকি ২টি উইকেট আনসুল কাম্বোজ ও জাসপ্রীত বুমরাহ ভাগাভাগি করেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩১ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারায় মুম্বাই। দুই ওপেনার ঈশান কিশান ৯ ও রোহিত শর্মা ৪ রান করেন। ওয়ান ডাউনে নামা নামান ধীর তো ৯ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি।
এমন বিপর্যয়ের মুহূর্তে দলের হাল ধরেন সূর্যকুমার যাদব ও তিলক ভার্মা। শুরুতে দুজনই ধীরেসুস্থে খেলে বিপর্যয় সামাল দেন। এরপর তিলক রয়েসয়ে খেললেও ঝড় তোলেন সূর্যকুমার। হায়দরাবাদের বোলারদের ন্যুনতম সম্মানও দেখাননি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের নম্বর ওয়ান এই ব্যাটার। তাদের অবিছিন্ন জুটিতে যোগ হয় ১৪৩ রান, যা আইপিএলের ইতিহাসে চতুর্থ বা তার নিচের জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
শেষের দিকে যখন মুম্বাইয়ের জয়ের জন্য ২৪ বলে ২৫ রান দরকার, সেঞ্চুরি থেকে তখনও ১৯ রান দূরে। ব্যাপারটা অনুধাবন করে তিলক ভার্মা স্ট্রাইক দিতে থাকেন সূর্যকে.১৭তম ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে সূর্যকে স্ট্রাইক দেন তিলক। পরের পাঁচ বলে সূর্য একটি সিঙ্গেল, দুটি চার, একটি ছক্কায় পৌঁছে যান ৯৬ রানে।
পরের ওভারের প্রথম বলে ফের সিঙ্গেল নিয়ে সূর্যকে স্ট্রাইক দেন তিলক। নটরাজনের করা সেই ওভারের দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মেরে সেঞ্চুরির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচও শেষ করে দেন সূর্যকুমার। ৫১ বলে ১২ চার ও ৬ ছক্কায় ১০২ রানের দারুণ ইনিংসটা খেলেন তিনি। এটি তার আইপিএল ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। একই মাঠে গতবার গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ৪৯ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি।
তিলক যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ৩২ বলে ৩৭ রান করেন। হায়দরাবাদের পক্ষে ভুবনেশ্বর কুমার, প্যাট কামিন্স ও মার্কো ইয়ানসেন ১টি করে উইকেট শিকার করেন।