পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার ইউরোপের তিন দেশ সফর শুরু করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সফরের শুরুতে রোববার (৫ মে) প্যারিসের ওরলি বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানান ফরাসি প্রধানমন্ত্রী গ্যাবরিয়েল আত্তাল।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ফ্রান্স সফরের মধ্যদিয়ে চীনা নেতা ২০১৯ সালের পর তার প্রথম ইউরোপ সফর শুরু করলেন। ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬০তম বার্ষিকী উপলক্ষে শি’র এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সমর্থন না দেয়ার জন্য চীনা নেতাকে সতর্ক করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকা ও ইউরোপ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন সরকারকে সহায়তা করছে। রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থন নিয়ে তাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। ১৪০ কোটি জনসংখার দেশ চীন এখন বিশ্বের অন্যতম সামরিক ও অর্থনৈতক শক্তিধর দেশ।
ইউরোপ সফরের শুরুতে প্যারিসে যাওয়ার মধ্যদিয়ে চীন-ফ্রান্স উষ্ণ সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে ম্যাক্রোঁ চীন সফর করেন। চীন ফ্রান্সকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি শক্তিশালী সদস্য হিসেবে মনে করে।
এলিসি প্রাসাদে রাষ্ট্রীয় ভোজ অনুষ্ঠানের পর সোমবার চীনা প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেয়েনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আলোচনা পুরোপুরি রাজনৈতিক হবে। রাশিয়া ও ইউক্রেন প্রসঙ্গ সেখানে গুরুত্ব পাবে।
২০২২ থেকে ইইউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু চীন রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ফ্রান্সে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত অবশ্য দাবি করেছেন, রাশিয়ার প্রতি চীন নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে চলছে।
ফ্রান্সের সরকারি সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া যাতে এই বিরোধ মেটানোর রাস্তায় আসে তার জন্য চীনকে চাপ দেবে ফ্রান্স।
প্যারিস সফর শেষে চীনা প্রেসিডেন্ট সার্বিয়া ও হাঙ্গেরি সফরে যাবেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাইরের দেশ সার্বিয়াকে চলতি সপ্তাহে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে বেইজিং। দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুচিচের অধীনে দেশটি নিয়মিতই চায়নার সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে।
এছাড়া হাঙ্গেরি সফরে শি জিনপিং দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার উদ্যোগ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।