গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনে পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড় ও দমনপীড়নের কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নিরাপত্তা বাহিনীর নজিরবিহীন তাণ্ডবের পর যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে বলে মনে করেন সমালোচকরা।
গাজায় শতাব্দীর নৃশংস বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামালোচনার ঝড় বইলেও তেল আবিবের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমা মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। সামরিক থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক। ইসরাইলকে সহায়তায় কোনো কার্পণ্য করছে না বাইডেন প্রশাসন।
গাজা ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিলেও এর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুসে উঠে সাধারণ মানুষ। তেল আবিবকে মার্কিন সহায়তার প্রতিবাদে শুরু থেকেই আন্দোলন করে আসছেন ফিলিস্তিনিপন্থিরা। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে শুরু করে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় চলে প্রতিবাদ। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ নৃশংসতা নাড়া দিয়েছে মার্কিন তরুণদের বিবেক।
গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে নজিরবিহীন আন্দোলন। এতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাইডেন প্রশাসন। মুখ রক্ষায় বিক্ষোভ দমনে চালানো হচ্ছে ব্যাপক ধরপাকড়। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে রীতিমত নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।
বিক্ষোভ দমনে পুলিশের এমন পদক্ষেপের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তীব্র সামালোচনা। বিভিন্ন দেশের গণতন্ত্র, সুশাসন এবং ন্যায়বিচার নিয়ে সবক দেয়া যুক্তরাষ্ট্রেই যেন উল্টো চিত্র।
সমালোচকরা বলছেন, বিভিন্ন দেশের আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর পদক্ষেপ নিয়ে যখন তখন উদ্বেগ জানালেও এখন নিজ দেশেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে চলছে ব্যাপক দমনপীড়ন। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের সমালোচনা করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষায় পশ্চিমা গণতন্ত্রিক দেশগুলো যা করছে তা পুরাটাই ভণ্ডামি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ইহুদি এবং বিবেকবান ছাত্র ও শিক্ষাবিদরা গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। প্রতিবাদ করায় তাদের ওপরও চলছে নির্মম নির্যাতন। ইসরাইলি স্বার্থের কাছে পশ্চিমা গণতন্ত্র আজ সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। ইসরাইলের স্বার্থে আঘাত লাগলেই পশ্চিমাদের কাছে সেটা গণতন্ত্র ও ইহুদিবিরোধী হয়ে যায়।
সমালোচকরা বলছেন, মূলত বিভিন্ন দেশের ওপর প্রভাব বিস্তারের জন্যই গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা কিংবা মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলো রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র। গাজা ইস্যুতে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর এমন ভূমিকায় মার্কিন প্রশাসনের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে বলেও মনে করেন তারা।