গ্রেফতারসহ নানা কঠোর পদক্ষেপ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। বিক্ষোভের লাগাম টানতে গত ১৮ এপ্রিল থেকে মার্কিন পুলিশ ৯০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেফতা করেছে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত প্রায় সাত মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। গাজার এই যুদ্ধে হোয়াইট হাউসের অকুণ্ঠ সমর্থনের বিরুদ্ধে এবং গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করতে শুরু করে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এরপর তা ক্রমশ বিস্তৃত হতে থাকে।
এপি জানিয়েছে, রোববার (২৮ এপ্রিল) এক দিনেই আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের কলেজগুলো থেকে ২৭৫ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন পুলিশ। গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীও রয়েছেন, যিনি আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে আগ্রহী। তিনি গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টেইন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গত ১৯ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০৮ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করার পর বিক্ষোভ আরও নতুন করে বেগবান হয়েছে।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা তাদের বিক্ষোভ-আন্দোলন থেকে পিছু হটতে নারাজ। অব্যাহত গ্রেফতার অভিযানের পরেও বিক্ষোভ দমাতে পারছে না মার্কিন পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। তাদের দাবি, অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।
এনবিসি টুডে জানিয়েছে, আমেরিকায় ৪০টির বেশি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ক্যাম্পাসে তাবু তৈরি করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
গেল বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে ইসরাইলে ১২০০ মানুষ নিহত হন, আর ২৫৩ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস। যার মধ্যে ১০৫ জনকে গত বছরের নভেম্বরে ছেড়ে দেয় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। ধারণা করা হয় হামাসের কাছে এখনো ১৩০ জনেরও বেশি জিম্মি রয়েছেন। যাদের মধ্যে অনেকেই জীবিত আছেন। জীবিতদের ছাড়িয়ে আনতে এখন চেষ্টা চালাচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রায় সাত মাস ধরে চালানো ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।