বিগত ৬ ও ৭ মার্চ ছিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। সভাপতি পদে নির্বাচিত হতে মরিয়া ছিলেন ৭ বারের আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এবং ২ বারের সভাপতি বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মীর যখন এ নির্বাচন নিয়ে ছিলো না তেমন কোনও মাথাব্যথা, তখন ভোট গণনার সময় তার উপস্থিতি স্পষ্ট করেছে তার আগ্রহ।
নানা জটিলতা শেষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল আসে তিনদিন পর ১০ মার্চ। মাহবুব উদ্দিন খোকনের ঝুলিতে ওঠে সভাপতির পদ। কিন্তু এবার শুরু হয় দলীয় নাটক।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিদ্ধান্ত আসে নির্বাচিত হলেও দায়িত্ব নিতে পারবেন না সভাপতি। তবে ক্ষমতা ছাড়া কি এতোটাই সোজা? ফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শাস্তি হিসেবে তাকে ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এতে ফোরামে দেখা দেয় বিভক্তি।
এ ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলন করেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। প্রশ্ন তোলেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের গণতন্ত্র নিয়ে। সংগঠনটির মহাসচিব ও বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামালকে করেন ব্যক্তিগত আক্রমণ। অভিহিত করেন অর্বাচীন বালক এবং কুলাঙ্গার এবং সরকারের এজেন্ট হিসাবে।
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এমন কাজ করার পরও, এতোদিন নীরব ছিল বিএনপি। অবশেষে কূলকিনারা করতে পারলেন না দলটির মহাসচিবও। ২৫ মার্চ রাতে এ ইস্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠক হয়। তবে এখানেও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বিএনপি। সূত্র বলছে, এবার তিনি আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত দেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তবে একই দলে কেন দ্বিমুখী নীতি? তৈমুর আলম খন্দকার থেকে এটিএম কামাল। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়াতেই তাদের হতে হয়েছে বহিষ্কার। শুধু তাই নয়, জাতীয় নির্বাচনে ভোটে আসা ১৫ নেতাকর্মীকেও দল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। সবশেষ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় একসঙ্গে ৭৩ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তবে কি তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে ছেলেখেলায় মেতেছে বিএনপি?
একটি মহল বলছে, আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তার কারণেই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেলেও নিজেদের স্বার্থেই খোকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিএনপি।