নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়মুক্তি পাবেন কি না, তা নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে।
সম্প্রতি বিষয়টি পর্যালোচনা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা। ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার চেষ্টা নিয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ট্রাম্পের বিচার হবে কি না, তা নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের দেয়া সিদ্ধান্তের ওপর।
তবে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত যা–ই আসুক, সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যেক বিচারপতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার করা বা না করা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত থেকে আসা সিদ্ধান্তই আগামীতে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের রূপরেখা নির্ধারণ করে দেবে।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালে গৃহীত পদক্ষেপের জন্য যেকোনো ফৌজদারি অভিযোগ থেকে তিনি দায়মুক্তি পাওয়ার যোগ্য— ট্রাম্পের এমন দাবি নিয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের একদিন পর আদালতে মামলাটি নিয়ে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিশেষ শুনানি হয়।
ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘এই দায়মুক্তি হবে নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার চেষ্টা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথের আনা অভিযোগ থেকে তার রক্ষাকবচ।’
তবে দায়মুক্তির বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট থেকে সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচারকাজ স্থগিত থাকবে। এ বিষয়ে আগামী জুনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে শুনানির সময় বিচারপতিরা যেসব প্রশ্ন তুলেছেন, এতে তাদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিভক্তির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি বিভক্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের এমন বিভক্তির জেরে যদি আরও জটিল সিদ্ধান্ত আসে, তাহলে তা ফৌজদারি এ অভিযোগ নিয়ে ট্রাম্পের বিচার শুরুর প্রক্রিয়াকে আরও বিলম্বিত করতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি আছেন নয়জন। তাদের মধ্যে রক্ষণশীলরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আর উদারপন্থি হিসেবে পরিচিত বিচারপতিরা সংখ্যালঘু। শুনানিতে করা প্রশ্নে এই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, উভয় পক্ষের বিচারপতিরা ইতিহাসের দিকে চোখ রেখে সিদ্ধান্ত নিতে চান।
এখানে দুটি প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রথমত, যদি সম্পূর্ণ দায়মুক্তি দেয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করে তার প্রতিদ্বন্দ্বীকেও হত্যা করতে পারবেন? দ্বিতীয়ত, এই দায়মুক্তি না থাকলে মেয়াদ শেষে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে প্রেসিডেন্টদের বিচারের মুখোমুখি বা জেলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি করবে কি না?
তবে এসব প্রশ্নের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত।