যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশের নির্যাতনে আরেক কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকের অনাকাঙিক্ষত মৃত্যু হয়েছে। ওহাইও রাজ্যের ক্যান্টর শহরে গ্রেফতারের সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা ফ্র্যাঙ্ক টাইসন নামের ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির ঘাড়ের ওপর পা দিয়ে চেপে ধরে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
মর্মান্তিক ঘটনাটি ২০২০ সালে পুলিশি নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তাকেও ঘাড়ের ওপর পা দিয়ে হত্যা করে পুলিশ। এতে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে ফের বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদন মতে, ওহাইও রাজ্যের পুলিশ ঘটনাটির একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, একটি বারের মেঝেয় ফেলে ফ্রাঙ্ক টাইসনের ঘাড়ের ওপর পা দিয়ে চেপে ধরে হাতকড়া পরাচ্ছে কয়েকজন পুলিশ সদস্য। আর তিনি বারবার বলছেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না।
মিনেসোটা রাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে গ্রেফতারের সময় ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েডকেও একইভাবে ঘাড়ের ওপর পা দিয়ে চেপে ধরেছিল পুলিশ। সে সময় ফ্লয়েডও বলেছিলেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’ কিন্তু এরপরও তার ঘাড়ের ওপর থেকে পা সরায়নি পুলিশ। এতে তার মৃতু্য হয়।
জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় মার্কিন পুলিশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে বর্ণবাদবিরোধী সেই বিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। ফ্লয়েড হত্যার ঘটনায় পরে দুই পুলিশ কর্মকর্তার কারাদণ্ড হয়।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর একই ধরনের ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে। সবশেষটা ঘটে গত সপ্তাহে। সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন মতে, গত ১৮ এপ্রিল ওহাইও’র ক্যান্টন শহরে একটি গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে যায়। দুর্ঘটনার পর তদন্ত শুরু করে ওহাইও পুলিশ।
দুর্ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে ৫৩ বছল বয়সী ফ্রাঙ্ক টাইসনকে ধরতে ক্যান্টনের একটি বারে অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। পুলিশ বারের ভেতরে টাইসনকে পাকড়াও করার চেষ্টা করে।
সে সময় টাইসন পুলিশকে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে বারের মেঝেতে ঠেসে ধরে। এ সময় টাইসন বলতে থাকেন, ‘ওরা (পুলিশ) আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে, কেউ শেরিফকে ডাকো।’
এরপর টাইসনের পিঠের ওপর দুই হাত ও হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে পুলিশ সদস্যরা। তখন টাইসন পুলিশকে বলতে থাকেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’ একপর্যায়ে টাইসন অচেতন হয়ে পড়েন।
এরপর এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘সে শান্ত হয়ে গেছে’। অপর পুলিশ কর্মকর্তা জবাব দেন, ‘সে সম্ভবত মারা গেছে।’ পুলিশ কর্মকর্তারা দেখতে পান, টাইসন আর নড়াচড়া করছেন না। তখন তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।