প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির চিন্তাধারা ছিলো অন্যের কাছে হাত পেতে চলা আর দেশকে পরনির্ভরশীল করা৷ তবে বর্তমান সরকার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণেরও কাজ করে চলেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকার পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সবসময় বলতেন আমরা কারও কাছে ভিক্ষা চাইব না, কারণ ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। আমরা মান-সম্মান নিয়েই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। সেই আদর্শে আমরা দেশকে এগিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি। খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করছে আওয়ামী লীগ সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
১৯৯৬ সাল থেকে আমরা গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলো জাতির পিতা করে দিয়ে গিয়েছেন। গবেষণা ছাড়া উন্নত জাত বা অধিক ফলন ফলানো সম্ভব না। নিজেদের আমিষ নিজেদেরই তৈরি করতে হবে-এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে গবেষণা জরুরি, এই খাতের আরও উন্নয়নের জন্য৷ গবাদিপশু, ডিম, মাছ, দুধ প্রত্যেকটি পণ্য বিএনপি আমলের চেয়ে এখন অনেক বেশি বেড়েছে৷ প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে প্রস্তুত সরকার৷ এ খাতে ভর্তুকিও দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়াম লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন রিজার্ভ মানিও তেমন ছিল না। এশিয়াতে তখন খাদ্য মন্দা। আমাদের লক্ষ্য ছিল, আমরা কারও কাছে হাত পেতে চলব না। নিজের ফসল নিজে উৎপাদন করব।
শেখ হাসিনা বলেন,
পার্লামেন্টে যেদিন ঘোষণা দিলাম বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তখন বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া বসা ছিলেন। তার সময়ের অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে খাদ্যের সাহায্য পাওয়া যাবে না। তাদের চিন্তাধারা ছিল, আমরা প্রতিনিয়ত অন্যজনের কাছে হাত পেতে থাকবো। অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকব, আর ভিক্ষা চেয়ে খাবার খাব। ২০০১ সালে আমাদের সরকারের মেয়াদ শেষ হলে, যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করি, তখন ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত আমরা রেখে গিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয়— ২০০৯ সালে যখন আমরা আবার ক্ষমতায় আসি তখন দেখি, ২৬ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত তো দূরের কথা বরং ৩০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল বাংলাদেশে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, ২০০১ সালে বিএনপি এসে সেগুলোর ওপর হামলা চালায়। অনেকের পোল্ট্রি ফার্মে বোমা মেরে মুরগি উড়িয়ে দিয়েছে। খামারিদের কাছ থেকে গরু নিয়ে খেয়ে ফেলেছে। পেঁপে থেকে শুরু করে সকল ফলের গাছ কেটে ফেলেছে। আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে তারা এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। দেশের জন্য এটা কত ক্ষতি হবে সেই চিন্তা তাদের মাথায় ছিল না।
এ সময় তিনি বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন,
দলটির নেত্রী খালেদা জিয়া তার শাসনামলে দেশের মানুষকে ডালভাত খাওয়াতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। আর তত্ত্বাবধায়ক (ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন) সরকার চেয়েছিল আলু খাওয়াতে৷ আর আমরা চাই মাছে-ভাতে বাঙালি থাকুক৷ মানুষ এখন এসব খেতে পারছে৷ অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা বারবার ক্ষমতায় এসেছে, তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, এটাই দুর্ভাগ্য। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে চলেছে।
এ সময় তিনি গভীর সমুদ্রের সম্পদ আহরণে উদ্যোক্তা পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি৷ আসছে ঈদুল আযহা। ওইসময় যত্রতত্র কোরবানি না করে নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির ব্যবস্থা করতে হবে৷ এছাড়া, আধুনিক কিছু কসাইখানাও স্থাপন করা উচিত বলেও জানান তিনি ৷