ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে দেশটির ১৪০ কোটি মানুষ। এছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কড়া নজর এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে ভোটাধিকার প্রয়োগের দিকে।
আগামী ১৯ এপ্রিল সাত দফার ভোটের প্রথম পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে ভারতে। ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ৩৬ প্রশাসনিক এলাকায় এবার ভোটের ইস্যু কী হবে? রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক কিসের ভিত্তিতে একে অপরের বিরুদ্ধ ভোট প্রত্যাশ করবে- সে সব নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দেশটির শাসক দল বিজেপির এবারের প্রধান নির্বাচনী ইস্যু কি? সম্প্রতি অযোধ্যায় উদ্বোধন করা রাম মন্দির নিয়েও ভারতের মানুষ কতটা খুশি-সম্প্রতি এক সমীক্ষায় এসব নিয়ে উঠে এসেছে বিস্ফোরক সব তথ্য।
ভারত গোটা বিশ্বে অর্থনৈতিক শক্তিতে পঞ্চম হলেও ক্রয়ক্ষমতার দিকে বিশ্বের তৃতীয় স্থানে। খুব শিগগিরই দেশটি বিশ্বের সব ক্যাটাগরিতে তৃতীয় শক্তিধর দেশ হিসাবে উঠে আসার স্বপ্ন দেখছে। সেই স্বপ্ন দেখাচ্ছে দেশটির পরপর দুই বারের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার।
গেল ১০ বছরে ভারতের অর্থনীতি নজিরবিহীনভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ঠিকই তবে দেশটির তীব্রতর হচ্ছে বেকার সমস্যা ও মূল্যবৃদ্ধি বা মুদ্রাস্ফীতি।
দেশটির চলমান ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের এই দুটো মারাত্মক সমস্যাকেই ভোটের বাজারে সবচেয়ে বড় ইস্যু হিসেবে ধরা হচ্ছে। এছাড়াও গত পাঁচ বছরে দেশে দুর্নীতির হার বৃদ্ধি এবং কৃষক আন্দোলনকে সরকারি শক্তি দিয়ে দমনের বিষয়টিও বড় ইস্যু।
প্রথম দফার ভোট ১৯ এপ্রিলের আগে দেশটির ১৯ রাজ্যে ১০০ লোকসভা আসনের ১০০ বিধানসভার ৪ শতাধিক আসনের ১১ হাজার মানুষের মতামতের ওপর ভিত্তি করে এমনই দাবি করছে দেশটির সিডিএস-লোকনীতি নামের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা।
গবেষণায় বলছে, কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপির এবারের নির্বাচনে প্রধান তিনটি ইস্যুকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছে। এর মধ্যে দুর্নীতি দমন, রাম মন্দির নির্মাণ এবং হিন্দুত্ব বা জাতীয়তাবাদ। তবে সাধারণ ভোটাররা মনে করেন, দেশে বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতি বেড়ে যাওয়াটা প্রধানতম সংকট।
তবে ভারতের রেকর্ড গতির উন্নয়নে খুশি জনমত-দাতাদের ৮২ শতাংশ মানুষ। বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ যথাক্রমে ২৭ শতাংশ ও ২৩ শতাংশ মানুষ। দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ৮ শতাংশ। শুধু তাই নয়, জনমতকারীদের ৫৫ শতাংশ মনে করেন, গত পাঁচ বছরে মোদি সরকারের দুর্নীতির পরিমাণও বেড়েছে।
অন্যদিকে, রাম মন্দির নির্মাণে খুশি ৮ শতাংশ মানুষ, তেমনই হিন্দুত্বতে খুশি মাত্র ২ শতাংশ ভোটার। সেটা থেকে পরিষ্কার বিজেপি যে রাম মন্দির ও হিন্দুত্ববাদ বা জাতীয়তাবাদকে সামনে রেখে ভোটে ৪০০ আসনের বেশি আসন পাবে বলে আত্মবিশ্বাসী-সেখানে এই পরিসংখ্যান কিছুটা হলেও চিন্তার ভাঁজ বাড়াবে বৈকি। তবে সমীক্ষার রায় শুধু মাত্র আভাস মাত্র। চূড়ান্ত রায় বোঝা যাবে ৪ জুন ভোটের ফল প্রকাশের মধ্য দিয়েই।