নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে ইরানে হামলার পরিকল্পনা তৈরি করেছে ইসরাইল। রোববার (১৪ এপ্রিল) রাতে দেশটির যুদ্ধ মন্ত্রিসভা পশ্চিমা নেতাদের সতর্কতা সত্ত্বেও ‘আক্রমণাত্মক এবং প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ উভয়ই অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ইরানের হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ না নিতে। একই সঙ্গে তিনি নেতানিয়াহুকে তর দেশের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে ‘সতর্কতার সঙ্গে ভাবারও’ পরামর্শ দেন।
বাইডেনের পরামর্শ মেনে ইসরাইল তাৎক্ষণিকভাবে ইরানে আক্রমণ না চালালেও তারা বলছে, ইরানে নিজের বেছে নেয়া উপায় ও সময়ে হামলার অধিকার ইসরাইলের রয়েছে।
জাতিসংঘে পাঠানো এক চিঠিতে ইসরাইল আরও বলেছে, ইরান ইসরাইলে হামলার মাধ্যমে বিপৎসীমার সব রেখাই অতিক্রম করেছে।
ইসরাইলের অনুরোধের পর রোববার রাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের হামলার বিষয়ে জরুরি বৈঠক করে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কাউন্সিলকে বলেছেন, আঞ্চলিক এবং প্রকৃতপক্ষে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা সময়ের সাথে সাথে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই অঞ্চল বা বিশ্বের কেউই আর যুদ্ধের ভার সহ্য করতে পারবে না।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেন, তাদের (ইরানের) মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে। ইরান বৈশ্বিক সন্ত্রাসের এক নম্বর পৃষ্ঠপোষক। এই অঞ্চল ও বিশ্বের অস্থিতিশীলতাকারী হিসেবে তাদের আসল চেহারা প্রকাশ পেয়েছে।
তিনি জাতিসংঘের মাধ্যমে ইরানের বিরুদ্ধে ‘সম্ভাব্য সব নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের জন্য আহ্বান জানান।
এদিকে আত্মরক্ষার জন্য তেহরানের কাছে পাল্টা জবাব দেয়া ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইয়েদ ইরাভানি।
সম্প্রতি দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরাইলের হামলার কথা তুলে ধরে আমির সাইয়েদ ইরাভানি বলেন,
নিরাপত্তা পরিষদ… আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
এ কারণেই তেহরানের কাছে পাল্টা জবাব দেয়া ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার দেশ সহিংসতা বৃদ্ধি হোক বা যুদ্ধ চায় না। তবে যেকোনো ধরনের হুমকি বা আগ্রাসনের জবাব দেবে ইরান।
শনিবার স্থানীয় সময় রাতে ইসরাইলে আঘাত হানে ইরানের শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র। সিরিয়ায় থাকা নিজেদের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ নিতে এ হামলা চালায় দেশটি। এ ইস্যুতে বেশ উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনীতির অঙ্গন।