সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। হামলায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে দুই দেশ পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ইরান ১৭০টি ড্রোন, ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১২০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এ হামলায় তেহরান ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির দাবি করলেও ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিমান ঘাঁটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত এবং এক শিশু গুরুতর আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে তেল আবিব।
হামলার পর ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বার্তাসংস্থা ইরানিয়ান স্টুডেন্টস নিউজ এজেন্সি (আইএসএনএ) একটি কলাম প্রকাশ করেছে। এতে তারা জানিয়েছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরাইলের নাভাতিম বিমান ঘাঁটি এবং হেরমন পাহাড়ের ওপর একটি সামরিক অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ইসরাইল এই ক্ষয়ক্ষতি গোপনের চেষ্টা করছে।
বার্তাসংস্থাটি বলেছে, নাভাতিম বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে কারণ গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে যে ভয়াবহ হামলা হয়েছিল, সেটি এই ঘাঁটি থেকে চালানো হয়েছিল।
এছাড়া হেরমন পাহাড়ের ওপর থাকা ইসরাইলি সেনাবাহিনীর একটি গোয়েন্দা অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। কারণ এই স্থান থেকে সিরিয়ায় ইরানের বিভিন্ন অবস্থানের ওপর চালানো অসংখ্য হামলা পরিচালিত হয়েছে।
হামলার ক্ষয়ক্ষতি লুকানোর বিষয়টি উল্লেখ করে বার্তাসংস্থাটি বলেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। কিন্তু ইসরাইল এসব ক্ষয়ক্ষতি লুকানোর চেষ্টা করছে।
এদিকে ইসরাইলে হামলা চালিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সফলতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি।
তিনি বলেন, ইসরাইলে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আঘাত হেনেছে, সেগুলোর সবগুলোর সম্পর্কে তথ্য জানা যায়নি। তবে সেগুলোর একটি অংশ নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। মাঠপর্যায় থেকে যেসব তথ্য-প্রমাণ এসেছে তাতে দেখা গেছে, ইসরাইলে হামলা চালিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সফলতা পাওয়া গেছে।
হামলার প্রতিবাদে হামলা হবে কি না, এ নিয়ে রোববার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকে ইসরাইল। সেখানে তেল আবিবের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে বৈঠক।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের হামলার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বাইডেন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলি কোনো পাল্টা হামলায় যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে না। বাইডেন নেতানিয়াহুকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে ইসরাইলের পাল্টা হামলার বিরোধিতা করবে।