বছর তিনেক আগে ক্ষমতা দখল করা মিয়ানমারের সামরিক সরকার আরও একটি বড় পরাজয়ের মুখে পড়ল। এবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী একটিগুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাতে যাচ্ছে জান্তা বাহিনী।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, অভ্যুত্থানবিরোধী অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মিলে কয়েক সপ্তাহ ধরে হামলা চালিয়ে আসছিল জাতিগত কারেন বিদ্রোহীরা। শেষ পর্যন্ত সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শহর মায়াওয়াদ্দির নিরাপত্তায় নিয়োজিত শত শত সেনা আত্মসমর্পণে রাজি হয়েছে।
থাইল্যান্ডের সঙ্গে মিয়ানমারের স্থল বাণিজ্যের বেশির ভাগই হয়ে থাকে মায়াওয়াদ্দি শহরের মাধ্যমে। শুক্রবার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়েছে, মায়াওয়াদ্দি শহরের ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে থাঙ্গানিনাংয়ে অবস্থিত সেনা ব্যাটালিয়নের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব তারা গ্রহণ করেছে।
কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন তাদের যোদ্ধাদের উচ্ছ্বসিত একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। এতে ওই যোদ্ধাদের হাতে অনেক অস্ত্রের প্রদর্শন দেখা গেছে।
সপ্তাহান্তে থেকে কারেন বাহিনী মায়াওয়াদ্দির ভেতরে থাকা শেষ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে তারা আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছে।
এটি সামরিক জান্তার জন্য একটি বড় ধরনের ধাক্কা। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শান রাজ্যের চিন সীমান্তবর্তী বিশাল এলাকা এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন এলাকা থেকে জান্তা বাহিনী থেকে হটিয়ে দেয়া হয়েছে।
সাম্প্রতি মাসগুলোতে এই সংঘাতে হাজার হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে, অথবা আত্মসমর্পণ করেছে কিংবা বিরোধীদের পক্ষে ভিড়েছেন। সামরিক বাহিনীর এই ঘাটতি মেটাতে সাধারণ মানুষের বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা চাপিয়ে দিয়েছে জান্তা সরকার।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসে সামরিক জান্তা। এরপর থেকে দেশটির আঞ্চলিক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো জান্তার ওপর হামলা শুরু করে। সম্প্রতি কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় যেতে বাধ্য হয়েছে সামরিক বাহিনী।