ইরানের পাল্টা হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সব ইউনিটের ছুটির বাতিলের পাশাপাশি জিপিএস সেবা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। একইসঙ্গে যেকোনো হামলা প্রতিহত করতে প্রস্তুত বলে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সিরিয়ায় দামেস্কে ইরানি কন্স্যুলেটে বিমান হামলার ঘটনায় নিহত জেনারেলদের বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দাফন সম্পন্ন হয়। এদিন তেহরানে জানাজার নামাজে অংশ নেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এসময়, হত্যার কঠোর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, এই হত্যার জন্য কঠিন পরিণতি অপেক্ষা করছে ইসরাইলের জন্য।
ইসলামী বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষ কমান্ডারদের মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিশোধের আগুনে ক্ষোভে ফুসছে তেহরান। দেশটির সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকেও সরকারের ওপর বাড়ছে চাপ। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কায় তৈরি হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। সেই সঙ্গে রিজারভিস্টদের তলব করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
এরইমধ্যে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সব ইউনিটের ছুটি বাতিল হয়েছে। এমনকি ইসরাইলজুড়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জিপিএস সেবা। তেহরান যেন ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করতে না পারে সেজন্যই এই পদক্ষেপ বলে জানায় তেল আবিব।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ছুটি বাতিলের তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। একই সঙ্গে যেকোনো পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে ইরানকে সতর্ক করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইরানের দিক থেকে হামলার ব্যাপারে প্রস্তুত রয়েছে ইসরাইল। কেউ ক্ষতি করলে কোনো ছাড়া দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে আমাদের ক্ষতি করবে বা আমাদের ক্ষতি করার পরিকল্পনা করবে, তাদেরও ক্ষতি করবে ইসরাইল। অনেক বছর ধরেই ইরান আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। সরাসরি এবং মিত্রদের দিয়ে, দুইভাবেই। ইসরাইলও তাই ইরান এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা ও আক্রমণাত্মক পন্থা অনুসরণ করছে। আমরা জানি কীভাবে নিজেদের রক্ষা করতে হয়। তাই সহজ নীতিতে কাজ করব। আর সেটা হচ্ছে যারা আমাদের ক্ষতি করবে বা ক্ষতি করার পরিকল্পনা করবে আমরাও তাদের ক্ষতি করবো।
গত ৭ অক্টোবর থেকে হামাসের হামলার জবাবে গাজায় চলছে ইসরাইলি গণহত্যা। লেবানন সীমান্তে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর সঙ্গেও হচ্ছে গুলিবিনিময়। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে ইরান-সমর্থিত হুতি ও শিয়া মিলিশিয়া বাহিনী। তবে এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো হামলা চালায়নি ইরান।