সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এ হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এক কমান্ডারসহ অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন।
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার (১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে ইসরাইলের বিমান অধিকৃত গোলান মালভূমি থেকে কনস্যুলেট ভবনকে হামলার নিশানা করেছিল। সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরাইলের ছোড়া কিছু ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে। কিন্তু অন্য আরও ক্ষেপণাস্ত্র কনস্যুলেটে আঘাত হেনে গোটা ভবনই ধসিয়ে দিয়েছে এবং ভেতরে থাকা প্রত্যেকেই হতাহত হয়েছেন।
গণমাধ্যমে আসা ছবিতে বহুতল ওই কনস্যুলেট ভবন থেকে ধোঁয়া এবং ধুলো উড়তে দেখা গেছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় মেজেহ জেলার একটি মহাসড়কে ইরানি দূতাবাসের ঠিক পাশেই রয়েছে এই কনস্যুলেট ভবন। তবে ইরানি দূতাবাসের উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষতি হয়নি বলে মনে হয়েছে।
কতজন হতাহত হয়েছে বা তাদের কারও নাম উল্লেখ না করে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মৃতদেহ উদ্ধার এবং ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আহতদের উদ্ধারের কাজ চলছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন কূটনীতিক আছেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, হামলায় ৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন কুদস ফোর্সের ঊর্ধ্বতন কমান্ডার, দুজন ইরানি উপদেষ্টা ও রেভল্যুশনারি গার্ডের পাঁচ সদস্য রয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনীর বিদেশি অপারেশন শাখা কুদস ফোর্সের সিনিয়র কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি।
ইরান ও সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইলের এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তবে ইসরাইলের সেনাবাহিনী বিদেশি গণমাধ্যমের এমন খবরের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এর আগে গত ২৬ মার্চ সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে বিমান হামলায় নয়জন তেহরানপন্থি যোদ্ধা ও ইরানের বিপ্লবী গার্ডসের একজন কমান্ডারসহ ১৩ জন নিহত হন। সিরীয় সরকারের ঘনিষ্ঠ গণমাধ্যমের মতে, হামলাটি যুক্তরাষ্ট্র চালিয়েছে।
দেশটির এক দশকেরও বেশি পুরনো গৃহযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের বাহিনীর পাশাপাশি যুদ্ধরত ইরানপন্থি দলগুলোকে লক্ষ্য করে শত শত হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।
এছাড়া পূর্ব সিরিয়ায় ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কয়েক দফায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। যদিও ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের সময় ইরাক এবং সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায় এ হামলা চালানোর দাবি ওয়াশিংটনের।