হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে গতকাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মধ্যকার ম্যাচে হয়েছে একের পর এক রেকর্ড। এদিন আগে ব্যাট করে আইপিএলে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে হায়দরাবাদ। রান তাড়া করতে নেমে মুম্বাইও ভালো জবাব দিচ্ছিল, কিন্তু ব্যাট করতে নেমে ধীর গতির ইনিংস খেলে মুম্বাইয়ে হতাশায় ডোবান অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। এর আগে হায়দরাবাদের ইনিংসের সময় বুমরাহকে ঠিকঠাক ব্যবহার না করার ও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) হায়দরাবাদ-মুম্বাই ম্যাচে দুই ইনিংস মিলে রান হয়েছে ৫২৩, যা আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে তারা করে ২৭৭ রান তোলে হায়দরাবাদ। এটিও আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এমন রানবন্যার ম্যাচে কিনা মুম্বাইয়ের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া ২০ বল খেলে করেছেন ২৪ রান। স্ট্রাইক রেট মাত্র ১২০! এই ম্যাচে ২০ বা তার বেশি রান করা আর কারোরই স্ট্রাইক রেট ১৫০ এর নিচে ছিল না।
ব্যাট হাতেই শুধু নয়, অধিনায়ক হিসেবেও পান্ডিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন তার সিদ্ধান্তের কারণে। গতকাল মুম্বাইয়ের হয়ে জাসপ্রীত বুমরাহ যখন তার স্পেলের দ্বিতীয় ওভার করতে আসেন ততক্ষণে হায়দরাবাদ ১২ ওভারে ১৭৩ রান তুলে ফেলেছে। অথচ ততক্ষণ পর্যন্ত মাত্র ১ ওভার বল করেছেন বুমরাহ। যা নিয়ে পান্ডিয়ার সমালোচনা করেছেন সাবেক ক্রিকেটাররা।
গতকাল বুমরাহ প্রথম বল করতে আসেন চতুর্থ ওভারে। সে ওভারে মাত্র ৫ রান দেয়ার পরও তাকে আর বল করাননি পান্ডিয়া। এদিকে ট্রাভিস হেড ও অভিষেক শর্মার ঝড়ের পর ততক্ষণে ঝড় তুলেছেন হেনরিখ ক্লাসেনও।
এমন ঝড়ের মধ্যেই কেন বুমরাহকে মাত্র ১ ওভার বল করানো হলো- ইএসপিএন-ক্রিকইনফোতে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক অজি ক্রিকেটার টম মুডি। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সাবেক এই কোচ বলেন, ‘আপনার কাছে যখন এই সংস্করণে বিশ্বের সেরা বোলার থাকে, আপনি তাকে প্রথম ১০ ওভারে মাত্র একটি ওভার করান এবং ১৩তম ওভারে দ্বিতীয়বার বলে ডাকেন, এটা অবিশ্বাস্য। সে সময় খেলা তো পুরোপুরি শেষ।’
তিনি যোগ করেন, ‘জাসপ্রীত বুমরাহর যা সামর্থ্য আছে, তাকে অবশ্যই পাওয়ার প্লেতে দুই ওভার বোলিং করতে হবে। পাওয়ার প্লেতে উইকেট নিতে হবে এবং সে উইকেটশিকারি।’
অস্ট্রেলিয়ার তারকা স্টিভ স্মিথ আইপিএলে ধারাভাষ্য দিতে এখন ভারতে। বুমরাহকে ব্যবহার করা নিয়ে পান্ডিয়ার অধিনায়কত্বের সমালোচনা করেছেন স্মিথও। স্টার স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘আমার মতে, ১৩ ওভারে বুমরাহকে এনে ওরা ভুল করেছে। যখন ওভাবে বল মারা হয়, তখন দলের সেরা বোলারকে একটু আগেভাগেই আনতে হয়। এটা মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার। আমি উইকেট নিতে ১৫-১৬ ওভারের মধ্যে বুমরাহর বোলিংয়ের কোটা শেষ করে ফেলতাম।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইরফান পাঠানও পান্ডিয়াকে ধুয়ে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘হার্দিক পান্ডিয়ার অধিনায়কত্বকে কমপক্ষে সাধারণ মানের বলতেই হবে। যখন ধ্বংসলীলা চলছে, তখন বুমরাহকে দূরে সরিয়ে রাখা আমার বোঝার বাইরে।’
ব্যাট হাতে পান্ডিয়া যা করেছেন তাও পাঠানের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ২৭৭ রান তাড়া করতে নেমে ১০ ওভারেই ১৪১ রান তুলে ফেলেছিল মুম্বাই। টপ অর্ডারের চার ব্যাটারই এদিন ব্যাট করেছেন ২০০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে। পান্ডিয়া যখন উইকেটে আসেন তখন জয়ের পথে ভালোভাবেই ছিল তার দল। মুম্বাইয়ের তখন দরকার ৫৬ বলে ১২৮ রান। এমন পরিস্থিতিতে মুম্বাই অধিনায়ক খেলেন ২০ বলে ২৪ রানের ইনিংস। পাঠান এ ব্যাপারে লিখেছেন, ‘পুরো দল যখন ২০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করে, তখন অধিনায়ক ১২০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করতে পারেন না।’