ব্যাটিংয়েই অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। ব্যাট হাতে গুজরাটকে বড় লক্ষ্য দেয়ার পর বোলিংয়েও চেপে ধরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। গত ম্যাচের সেরা বোলার মুস্তাফিজুর রহমানের শুরুটা ভালো না হলেও শেষদিকে দুর্দান্ত বল করেছেন তারকা এই পেসার। বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মুস্তাফিজের চেন্নাই।
চেন্নাইয়ের চিপাক স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) গুজরাট টাইটান্সকে ৬৩ রানে হারিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। চেন্নাইয়ের দেয়া ২০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে থেমেছে গুজরাট। ৪ ওভার বোলিং করে ৩০ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ।
চেন্নাইয়ের দেয়া বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি গুজরাটের। পাওয়ারপ্লের মধ্যেই ২ উইকেট হারিয়ে বসে শুভমান গিলের দল। দুই ওপেনার শুভমান গিল এবং ঋদ্ধিমান সাহাকে সাজঘরে ফেরান দীপক চাহার।
আগের ম্যাচে পঞ্চম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে গুজরাটের বিপক্ষে তাকে আনা হয় দ্বিতীয় ওভারে। গতদিন নিজের প্রথম ওভারে চমক দেখালেও এদিন শুরুটা ভালো করতে পারেননি বাংলাদেশের তারকা পেসার। প্রথম দুই ওভারে ২৩ রান দিয়ে মেলেনি কোনো উইকেট।
মুস্তাফিজের শুরু ভালো না হলেও বাকিরা দারুণ প্রতিরোধ দেখিয়েছেন। চতুর্থ উইকেটে ডেভিড মিলার এবং সাই সুদর্শন বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও সেটা হতে দেননি ভারতীয় পেসার তুষার দেশপান্ডে। মিলারকে ফেরানোর পর দ্রুত সময়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকেও ফেরান তিনি।
বাংলাদেশ সিরিজে ইনজুরিতে পড়া মাথিশা পাথিরানা এই ম্যাচ দিয়েই ফিরেছেন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে। তবে ফেরাটা ভালো হয়েছে এই পেসারের। ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে সাই সুদর্শনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি নিয়েছেন তিনি। গুজরাটের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৭ রান এসেছে সুদর্শনের ব্যাট থেকে। মিলার এবং ঋদ্ধিমান করেছেন সমান ২১ রান। তবে এছাড়া কেউই ২০ রানের বেশি করতে পারেনি।
প্রথম স্পেলে ভালো করতে না পারলেও শেষদিকে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১৭ তম ওভারে দুর্দান্ত স্লোয়ারে সাজঘরে ফেরান আফগানিস্তানের বিধ্বংসী ব্যাটার রশিদ খানকে। ওই ওভারে মাত্র ১ রান দেন তিনি। নিজের শেষ ওভার এবং ম্যাচের ১৯তম ওভারে এসেও অসাধারণ বোলিং করেছেন ফিজ। গুজরাটের শেষ ব্যাটার রাহুল টেওয়াটিয়াকে দারুণ এক কাটারে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তিনি।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে রাচিন রবীন্দ্র এবং শিভম দুবের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ২০৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় চেন্নাই। রবীন্দ্র আক্ষেপ নিয়ে আউট হলেও ফিফটি হাঁকিয়েছেন শিভাম দুবে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে এদিন শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন কিউই অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্র। ৫ ওভারের মধ্যে দলকে পৌঁছে দেন ৫৮ রানে। তবে দুর্ভাগ্যবশত ষষ্ঠ ওভারে রশিদ খানের বলে স্টাম্পিং হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ২০ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৬ রানে থামে তার ইনিংস। ৩৬ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৬ রান করে জনসন স্পেন্সারের বলে কট বিহাইন্ড হন অধিনায়ক গায়কোয়াড়।
চতুর্থ উইকেটে ড্যারেল মিচেলকে একপাশে রেখে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছড়ান দুবে। রশিদ-মোহিতদের তুলোধুনো করে ২৩ বলে ৫ ছক্কা ও ২ চারের মারে ৫১ রান করে আউট হন তিনি। মিচেলের ইনিংস থামে ২০ বলে ২৪ রানে। শেষদিকে সামির রিজভী ৬ বলে ১৪ ও রবীন্দ্র জাদেজা ৩ বলে ৭ রান করে দলের সংগ্রহ দুইশ পার করেন।
গুজরাটের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন রশিদ খান। ৪ ওভার বল করে ২ উইকেট নিলেও ৪৯ রান দেন তিনি। একটি করে উইকেট নেন সাই কিশোর, স্পেন্সার জনসন ও মোহিত শর্মা।