রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে দুই মাসের বেশি লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে না ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। কারণ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত অর্থ ও রশদ বাহিনীর নেই। এমনটাই বলেছেন যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্যার রব মাগোয়ান।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের কমন্স প্রতিরক্ষা কমিটির এক শুনানিতে অংশ নিয়ে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা এই মুহূর্তে যুদ্ধাস্ত্রের জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছি, তা দিয়ে সব হুমকি মোকাবিলা সম্ভব না। আমরা স্পষ্ট করছি যে আমাদের আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে।
একই শুনানিতে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস বলেন, তিনি সাম্প্রতিক বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টের সাথে আলোচনা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। তারা বরাদ্দ বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
শ্যাপস আরও বলেন, যদি কোনো সংঘাত শুরু হয়, সেক্ষেত্রে সামরিক জোট ন্যাটোই তাদের ভরসা। কারণ ন্যাটোর পাশাপাশি লড়াই করবে যুক্তরাজ্য। সেক্ষেত্রে সম্মিলিত শক্তি রাশিয়ার শক্তিকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিরক্ষমন্ত্রী শ্যাপস।
দুই বছর ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে মিত্র দেশটিকে অর্থ ও যুদ্ধ রসদ দিয়ে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে আসছে ন্যাটো।
কিন্তু বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম নিয়েও রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পেরে উঠছে না ইউক্রেন। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে আরও বেশি হুমকি মনে করছেন ন্যাটোর কর্মকর্তারা।
এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমা রাজনীতিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের মুখে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধের সুর শোনা যাচ্ছে। তারা বলছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করবে ন্যাটো। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ন্যাটোর সামরিক কমিটির সভাপতি ও ডাচ নৌবাহিনীর এডমিরাল রব বোয়ার বলেন, ‘এমনটা নয় যে আমরা শান্তিতে রয়েছি। এমন অবস্থায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে সংঘাতের জন্য জোট প্রস্তুতি শুরু করেছে। জোটের সদস্য দেশের বেসামরিক নাগরকিদেরও সেটাই করা উচিৎ।’
এছাড়া জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ন্যাটোর ওপর হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। জার্মান সংবাদমাধ্যম দার স্পিজেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, আমাদের গোয়েন্দারা মনে করছেন, পাঁচ থেকে আট বছরের মধ্যে এমন হামলা হতে পারে।’
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা প্রায় প্রতিদিনই ক্রেমলিনের কাছ থেকে হুমকি শুনছি। তাই আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে যে, (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) ভ্লাদিমির পুতিন একদিন যেকোনো সময় ন্যাটোর সদস্য দেশ আক্রমণ করতে পারেন।’