ওয়েম্বলি জয়ের পর, এবার ব্রাজিলের মিশন সান্তিয়াগো বার্নাব্যু। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে একাত্মতা ঘোষণা করে স্বাগতিক স্পেনের মুখোমুখি হবে সেলেসাওরা। তবে, প্রীতি ম্যাচ হলেও কোপার আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে জয় ভিন্ন কোনো ভাবনা নেই দরিভাল জুনিয়রের। অন্যদিকে ফুয়েন্তের কাছে ব্রাজিল ম্যাচ মানেই মর্যাদার লড়াই। আর সেখানে থাকবে না একবিন্দু ছাড়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আড়াই’টায়।
২০১৩ সালে শেষবার মুখোমুখি হয়েছিল দুটি দল। কনফেডারেশন কাপের ফাইনালে সেসময়কার অপ্রতিরোধ্য স্প্যানিশদের ৩-০ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল। ফ্রেডের জোড়া গোলের সঙ্গে, নেইমারের এক গোলে সেবার সেলেসাওদের সামনে পাত্তাই পায়নি লা ফিউরা রোজারা।
এরপর কালে-কালে অনেক পানি গড়িয়েছে অ্যামাজনে। ফুটবল দুনিয়ায় উত্থানপতনের খেলাও হয়েছে অনেক। আগের সেই অদম্য স্পেন যেমন নেই, ব্রাজিলও এখন ক্ষয়িষ্ণূ। তবে পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেন, যতই বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচের আবহ তৈরি করা হোক না কেন, দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের ম্যাচ যে উত্তেজনার বারুদ ছড়াচ্ছে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে।
অনেকটাই ভালো অবস্থানে আছে ব্রাজিল। টানা ৬ মাস জয়-পরাজয়ের দোলাচলে থাকা দলটা অবশেষে খুঁজে পেয়েছে তীরের দেখা। দুই দফায় কোচ বদলিয়ে দরিভালে স্থিতি পেয়েছে হলুদ জার্সিরা। প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমকে দিয়েছেন তিনি। এবার তার নজর রিয়াল মাদ্রিদের হোম ভেন্যুতে। এ ম্যাচের আগে দরিভালের আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে ভিনিসিউস এবং রদ্রিগো। অতিথি হয়ে ব্রাজিল, স্পেনে এলেও বার্নাব্যু যে এ দুজনের আতুর ঘর। তাই সমর্থনের পাল্লা এককভাবে যে স্পেনের দিকে থাকবে না সেটা তো বলাই যায়। সঙ্গে যদি এন্দরিককেও মিলিয়ে নেয়া যায়, তাহলে তো সেরের ওপর সোয়া সের।
ম্যাচ নিয়ে ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র বলেন, ‘স্পেনের ঘরের মাঠে খেলা, অবশ্যই তারা ফেভারিট। তবে শেষ ম্যাচের ফল দেখলে হয়তো সবাই আমাদের এগিয়ে রাখবে। তবে ম্যাচের আগে এই কাগজে কলমের হিসেবে আমি মনোযোগ দেই না। আমার চিন্তা মাঠের লড়াই নিয়ে। সেখানে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। ভিনি আর রদ্রি এই মাঠে আমার জন্য ট্রাম্পকার্ড। আমি একেবারেই চিন্তা করছি না। এন্দরিক বিশেষ প্রতিভা, তাকে আমি আগলে রাখতে চাই। সে এ ম্যাচে খেলবে, তবে শুরু থেকে নয়।’
দরিভাল যতই এটাকে প্রীতি ম্যাচের আবহে দেখুন না কেন, ফুয়েন্তের সোজা কথা- ব্রাজিল-পেন ম্যাচ কখনই ফ্রেন্ডলি হতে পারে না। ইউরোর আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে এটা স্পেনের বড় সুযোগ বলে মনে করেন তিনি। কলম্বিয়া ম্যাচের ফল পক্ষে না আসায় কিছুটা ব্যাকফুটে স্প্যানিশরা। যদিও ব্রাজিল ম্যাচে তার প্রভাব থাকবে না বলেই বিশ্বাস স্পেন কোচের।
স্পেন কোচ লুইস ডি লা ফুয়েন্তে ম্যাচপূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ইউরোর আগে আমাদের দ্রুত গুছিয়ে নিতে হবে। সময় খুব কম। কলম্বিয়ার ম্যাচ আমাদের একটা ধাক্কা দিয়ে গেছে। তবে সেটা ব্রাজিলের বিপক্ষে কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমি ছেলেদের বলেছি, এ ম্যাচ জিততেই হবে। ব্রাজিলকে যেকোনো ম্যাচে হারানো মানে আপনি বিশ্বসেরা।’
ফুটবলের ইতিহাসে মাত্র ৯ বার পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল এবং স্পেন। যেখানে মাত্র ২ বার জিতেছে স্পেন, যার শেষটা ১৯৯০ সালে। দুই ম্যাচ ড্র এর বিপরীতে ব্রাজিলের জয় আছে ৫টা।