রাশিয়ার মস্কোয় ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় জড়িত সন্দেহে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে খবর প্রকাশ করেছে রুশ বার্তা সংস্থা তাস।
রোববার (২৪ মার্চ) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটির এডিটর ইন চিফ মার্গারিটা সিমোনিয়ানের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি ভিডিওর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটক একজন ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাকে ৫ লাখ রাশিয়ান রুবল (৫ হাজার ৪০০ ডলার) পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।
‘আমি টাকার জন্য ক্রোকাসে গুলি করে মানুষ মেরেছি; আমাকে ৫ লাখ রুবল দেয়ার (প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল)।’ বলেন তিনি।
আটক ব্যক্তি আরও জানান, যখন প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তখনই তার কার্ডে অর্ধেক রুবল ট্রান্সফার করা হয় এবং বলা হয়, বাকি অর্ধেক পরে পাবে।
তবে এই অর্থ তাকে কে বা কারা দিয়েছিল সে বিষয়ে প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়নি। আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের হাত থেকে পালাতে গিয়ে কার্ডটি হারিয়ে ফেলেন তিনি।
এদিকে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় সরাসরি জড়িত চার সন্ত্রাসীসহ ১১ জনকে আটক করেছে গোয়েন্দারা। সন্ত্রাসীদের সহযোগীদের শনাক্ত করতে এবং হামলার বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
এফএসবি বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে যে, সন্ত্রাসী হামলাটির সতর্কতার সাথে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সন্ত্রাসীরা যে অস্ত্রগুলি ব্যবহার করেছিল সেগুলি আগে থেকেই একটি গুপ্ত স্থানে রাখা হয়েছিল।’
গত শুক্রবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় মস্কোর উত্তরে ক্রাসনোগোর্স্ক অঞ্চলে ক্রোকাস সিটি হলে জড়ো হয়েছিল শত শত মানুষ। গান শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিট আগে কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি থিয়েটারে ঢুকে নির্বিচারে গুলি ছুড়তে শুরু করেন। এ ঘটনায় ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সবশেষ জানা গেছে। এ ঘটনায় আরও প্রায় দেড়শ মানুষ আহত হয়েছেন।
এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আইএসের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘বর্বর সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হামলায় সরাসরি জড়িত চারজনকে ইউক্রেনে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
কয়েক দশকের মধ্যে রাশিয়ায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর এটি একটি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি, কিউবাসহ বিশ্বনেতারা।