সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ’র ওপর ভারতীয় নৌবাহিনী কড়া নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নৌপ্রধান অ্যাডমিরাল আর হরি কুমার।
শনিবার (২৩ মার্চ) এডেন উপসাগর, আরব সাগর ও লোহিত সাগরে ড্রোন বিধ্বংসী, ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ও জলদস্যু বিরোধী আক্রমণে ভারতীয় নৌবাহিনীর অভিযানের ১০০ দিন সম্পর্কে কথা বলার সময় তিনি এ কথা জানান।
ভারতের নৌপ্রধান বলেন, আপনারা যেমনটি জানেন, এমভি আবদুল্লাহ নামের একটি জাহাজ হাইজ্যাক করে সোমালিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, আমরা এখন এটির ওপর কড়া নজর রাখছি। মূলত এটিকে এখন জলদস্যু জাহাজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে নাকি জলদস্যুদের মাদার জাহাজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। তাই, সোমালীয় জলসীমায় চলাচলকারী জাহাজগুলোর ওপর আরও ঘনিষ্ঠ নজরদারি করতে চলেছি আমরা।
নয়াদিল্লির নবনির্মিত নৌসেনা ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাডমিরাল আর হরি কুমার বলেন, ‘কোনো ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজ’ সমুদ্রে হুতিদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়নি।
গেল ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ নামে বাংলাদেশি একটি জাহাজ জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপর থেকেই তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সরকার।
এদিকে জিম্মি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ এবং বাংলাদেশি ২৩ নাবিককে উদ্ধারে মালিকপক্ষ এবং সোমালিয়ান জলদস্যুদের মধ্যে আলোচনা চলছে। উভয়পক্ষই পরস্পরকে আস্থায় আনতে কাজ করছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
জাহাজ মালিক এবং সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, উভয়পক্ষ আস্থায় এলে দাবি-দাওয়া নিয়ে দর কষাকষি শুরু হবে। শিগগিরই এ প্রক্রিয়া শুরুতে কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের পর উভয়পক্ষ নিজেদের মধ্যে আস্থা তৈরিতে কাজ করছে। এরপর মুক্তিপণের অঙ্ক নিয়ে দর–কষাকষি, কীভাবে মুক্তিপণ দেয়া হবে—এসব বিষয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা পাওয়া গেছে। দস্যুদের সঙ্গে মালিকপক্ষের দর–কষাকষিতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য এসব আলোচনা খুব গোপন রাখা হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, ৩০০ কোটি টাকার জাহাজ ও ১০০ কোটি টাকার কয়লা উদ্ধারে একজন বিশ্বস্ত এজেন্টের খোঁজ করছে মালিকপক্ষ কবির স্টিল। এতদিন পর্যন্ত শুধু লন্ডন ভিত্তিক ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইমেইল চালাচালি করছিল কোম্পানিটি। সবশেষ বুধবার সোমালিয়ান জলদস্যুদের সঙ্গে কথা হওয়ার পর নিরাপদে মুক্তিপণ পাঠানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। মূলত এ জলদস্যুদের কবলে পড়া এমভি জাহান মণি উদ্ধারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে কবির স্টিল।