বিএনপির শীর্ষ পদে বড় রদবদলের গুঞ্জন তাহলে সত্যি হতে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে মহাসচিব পদ নিয়ে। ঢেলে সাজানো হচ্ছে দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম – স্থায়ী কমিটি। এতে বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিষ্ক্রিয়রা যেমন বাদ পড়তে পারেন, তেমনটি নতুন মুখের সমন্বয়ে পূর্ণ করা হবে খালি পদ।
ঢাকায় গত বছরের ২৮ অক্টোবর সংঘাত-সংঘর্ষের পর গ্রেফতার হন বিএনপির দুই ডজন শীর্ষ নেতা। এর মধ্যেই ৭ জানুয়ারি সম্পন্ন হয় বিএনপিবিহীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
সাড়ে তিন মাস পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কারামুক্ত হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এরপর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে দলের কর্মসূচিতে দেখা গেলেও বাসায় ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আমগীর।
গত ৪ মার্চ সস্ত্রীক চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান মির্জা ফখরুল। ১৯ দিন পর শনিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকায় ফেরেন তিনি। বিমানবন্দরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শারীরিকভাবে তিনি অনেকটা সুস্থ। হাইকমান্ডের নির্দেশে সক্রিয় হবেন রাজনীতিতে।
ফখরুলের বিদেশে অবস্থান করার সময় থেকেই মূলত বিএনপির শীর্ষ পদে বড় রদবদলের গুঞ্জন ওঠে। দলের মহাসচিব পরিবর্তন ও সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামকে (স্থায়ী কমিটি) ঢেলে সাজানো নিয়ে আলোচনা আছে দলের ভেতরে-বাইরে।
দলটির নেতারা বলছেন, কাউন্সিল নয়, নির্বাহী ক্ষমতাবলে দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই সিদ্ধান্ত নেবেন। চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলন এগিয়ে নিতে নেতৃত্বের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকমান্ড।
তারা এও বলছেন, মহাসচিব হিসেবে শীর্ষ নেতৃত্ব যাকে খুশি মনোনীত করতে পারেন। তবে মির্জা ফখরুলের মতো নিষ্ঠা ও ত্যাগী নেতার বিকল্প খুঁজে পাওয়া সহজ নয়।
এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু সময় সংবাদকে বলেন, এত তাড়াতাড়ি মহাসচিব পদে পরিবর্তন আনা উচিত বলে মনে হচ্ছে না। বর্তমান মহাসচিব যদি অনীহা প্রকাশ না করেন, তবে তাকে পদে রাখাটাই ভালো হবে। কারণ তিনি খুব সুনামের সঙ্গেই দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।
আর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলের পদ পরিবর্তন, পদায়ন তো চলমান প্রক্রিয়া। এটা যেকোনো রাজনৈতিক দলেই সারা বছর ধরে চলতে থাকে। এখন কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। সামনে আরও হবে।
কাউন্সিল না-কি দলীয় সিদ্ধান্তে রদবদল! এমন প্রশ্নে বিএনপি নেতারা বলছেন, সম্মেলনের কোনো পরিবেশ নেই এখন। তাই যা হবে চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্বাহী আদেশে।
আমীর খসরু বলেন, কাউন্সিলের বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। এছাড়া দলের পদে রদবদল তো দলীয় চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্ত। তিনি যাদেরকে প্রয়োজন মনে করবেন, তারাই পদে আসবেন।
মিন্টু বলেন, স্থায়ী কমিটিতে অনেক পদ শূন্য আছে। দ্রুত পদগুলো পূর্ণ করা বাঞ্চনীয়। সম্মেলনের মাধ্যমে হওয়ার নিয়ম। কিন্তু সম্মেলন হতে দেরি হলে এ শূন্যস্থানগুলো পূরণ করা দরকার।
দলের স্থায়ী কমিটির ১৯টি পদের মধ্যে ৫টি পদ শূন্য রয়েছে বহুদিন ধরে। এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির ১৩০টি পদও খালি।
পরিবর্তন যাই হোক, দলীয় স্বার্থ বিবেচনায় পরীক্ষিত নেতারাই নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বিএনপির নেতারা।