বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ব্যয়বহুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আইপিএল। প্রায় প্রতি বছরই নতুন কোনো সংযোজন নিয়ে হাজির হয় টুর্নামেন্টটি। এবারের টুর্নামেন্টে নতুনত্ব দেখা যাবে রিভিউয়ের ক্ষেত্রে। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকে আরও নিখুঁত এবং গতিশীল করে তুলতে স্মার্ট রিপ্লে পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে আইপিএল।
স্মার্ট রিপ্লে পদ্ধতি এর আগে ব্যবহৃত হয়েছে ইংল্যান্ডের ১০০ বলের টুর্নামেন্ট দ্য হানড্রেডে। এবার সেটাই আনা হবে আইপিএলে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) এমন তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো।
ক্রিকইনফোর প্রতিবেদন মতে, স্মার্ট রিপ্লে পদ্ধতিতে টেলিভিশন আম্পায়ার এবং হক-আই অপারেটর একই রুমে থেকে কাজ করবেন। ফলে দুজনের মধ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষ অর্থাৎ ব্রডকাস্ট ডিরেক্টরের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনের কোনো প্রয়োজন নেই।
নতুন এই পদ্ধতিতে হক-আই ক্যামেরার মাধ্যমে বেশি ফুটেজ পাবেন টিভি আম্পায়ার। এই পদ্ধতিতে থাকবে আরও বেশি অ্যাঙ্গেল এবং সেই অ্যাঙ্গেলগুলোকে একই সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন স্ক্রিনে দেখানোর সুযোগ থাকবে আম্পায়ারের জন্য। ফলে সিদ্ধান্ত নেয়া আরও সহজ হবে আম্পায়ারের জন্য।
একটি ম্যাচে সাধারণত আটটি হক-আই ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। দুই প্রান্তে সোজা বাউন্ডারির সঙ্গে দুদিকের স্কয়ার লেগে দুটি করে ক্যামেরা থাকে। আইপিএলে গত মৌসুম পর্যন্ত হক-আই ক্যামেরা শুধু বল ট্র্যাকিং ও আল্ট্রা-এজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতো। ফলে এলবিডব্লু, কট বিহাইন্ডের বাইরের সিদ্ধান্তগুলোতে ব্রডকাস্টাররা তাদের ক্যামেরার ফুটেজই টেলিভিশন আম্পায়ারকে সরবরাহ করতেন। এখন হক-আই ক্যামেরা স্প্লিট স্ক্রিন রিপ্লের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হবে।
যেমন কোনো ফিল্ডার যদি শূন্যে লাফিয়ে ক্যাচ নেন, তাহলে ব্রডকাস্টাররা একাধিক স্ক্রিনে রিপ্লে দেখাতে পারতেন না। এখন সেই সুযোগ থাকবে। বল ধরার সময় ফিল্ডারের পা দেখার জন্য ভিন্ন ভিন্ন স্ক্রিনের সহায়তা নিতে পারবেন আম্পায়ার। একইভাবে ওভারথ্রো থেকে আসা বাউন্ডারির ক্ষেত্রেও এটি সহায়তা করবে। অনেকগুলো স্ক্রিন ব্যবহার করে ওভারথ্রো হওয়ার সময় দুই ব্যাটার একে অন্যকে অতিক্রম করেছে কিনা সেটা দেখে সহজেই দেখতে পারবেন আম্পায়ার। ওভারথ্রোর সময় ফিল্ডারের হাত থেকে বল বেরোনোর আগে দুই ব্যাটার একে অন্যকে অতিক্রম না করলে সেটি ওভারথ্রো থেকে আসা রানের সঙ্গে যোগ হয় না।
স্টাম্পিং পদ্ধতিকে আরও সহজতর করবে স্মার্ট রিপ্লে। এই পদ্ধতিতে প্রথমে টেলিভিশন আম্পায়ার হক-আই অপারেটরকে একাধিক স্ক্রিনের রিপ্লে দেখাতে বলবেন। বল ও ব্যাটের মধ্যে পরিষ্কার ফাঁক থাকলে তিনি সরাসরি স্টাম্পিং পরীক্ষা করবেন। আর ফাঁক দেখা না গেলে আম্পায়ার আল্ট্রা-এজের সহায়তা নেবেন।
স্টাম্পিংয়ে টেলিভিশন আম্পায়ার তিনটি স্ক্রিনে রিপ্লে দেখতে পারবেন। ক্রিজের পাশে বসানো দুটি ক্যামেরার পাশাপাশি সামনে বসানো আরেকটি ক্যামেরার ফ্রেমে। আগে ব্রডকাস্টাররা শুধু স্টাম্পে বসানো ক্যামেরার ফুটেজের সহায়তা নিতেন। ওই ক্যামেরা সেকেন্ডে ৫০টি ফ্রেম ধারণ করতে পারত। আর হক-আই ক্যামেরা ধারণ করে সেকেন্ডে প্রায় ৩০০টি ফ্রেম। নতুন এই পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে স্থানীয় ও বিদেশি ১৫ জন আম্পায়ারের দুই দিনব্যাপী কর্মশালা মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।