Homeআন্তর্জাতিকইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কে কতটা শক্তিশালী?

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কে কতটা শক্তিশালী?

বিশ্বজুড়ে সংঘাত বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। এর একদিকে রয়েছে ইরান, চীন ও রাশিয়া। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা। এ অবস্থায় রাইসি প্রশাসন যেভাবে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে, তাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব; এমনটাই আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। তবে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের ছায়াযুদ্ধের মধ্যে কার সামরিক ভান্ডার কত শক্তিশালী, তা নিয়েও চলছে তুমুল আলোচনা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার যেমন লক্ষণ নেই, তেমনি গাজায় কমছে না ইসরাইলি আগ্রাসন। তবে, এত কিছুর মধ্যে পশ্চিমাদের মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা একাধিক গণমাধ্যমের দাবি, হামাস থেকে শুরু করে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী সবাইকেই পেছন থেকে অস্ত্র সরবরাহ করছে ইরান।

এ দাবি অস্বীকারের মধ্যেই এডেন উপসাগর, লোহিত সাগরে ইসরাইলগামী জাহাজে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা হামলা চালাচ্ছে। এর পেছনেও পশ্চিমা বিশ্বের শত্রু তেহরানের মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৈরিতার ইতিহাস নতুন নয়। ১৯৫০-এর পর থেকেই দেশ দুটির সম্পর্ক জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। পশ্চিমাদের সঙ্গে তিক্ততার মধ্যেই নিজেদের অস্ত্র ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছে রাইসি প্রশাসন।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০২৪ সালের সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, সামরিক শক্তির দিক থেকে বিশ্বের ১৪৫টি দেশের মধ্যে ইরানের অবস্থান ১৪তম। আর প্রথম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের বর্তমানে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার সক্রিয় সেনাসদস্য রয়েছে। সংরক্ষিত সদস্য রয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার।

এছাড়াও অন্তত দেড় লাখ ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসি সেনা আছে তেহরানের। দেশটির সেনাবাহিনীতে ট্যাংক সংখ্যা এক হাজার ৬৩৪টি। সাঁজোয়া যানের সংখ্যা দুই হাজার ৩৪৫। সেনাদের ব্যবহারের জন্য ইরানের কামান রয়েছে দুই হাজার ১২৮টি। পাশাপাশি ৫৭০টি সেলফ প্রপেলড আর্টিলারি এবং এক হাজার ৯০০টি রকেটচালিত কামান রয়েছে।

ইরানের বিমানবাহিনীতে ৫০৯টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফাইটার বিমান ১৪২টি, অ্যাটাক বিমান ১৬৫টি, হেলিকপ্টার ১২৬টি ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার ১২টি। পাশাপাশি প্রশিক্ষণের জন্য ১০৪টি ও পরিবহনের জন্য ৯৮টি উড়োজাহাজ রয়েছে তাদের। ইরানের নৌবাহিনীতে রয়েছে ৩৪টির মতো সাবমেরিন। পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রে রাইসি প্রশাসন পিছিয়ে থাকলেও, এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র।

ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মতে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড়, বিশেষ করে স্বল্প আর মাঝারি পাল্লার। এসব ক্ষেপণাস্ত্র অনেক ক্ষেত্রেই সৌদি আরব ও উপসাগরীয় এলাকার অনেক ইসরাইলি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

তবে কয়েক বছরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ড্রোন সক্ষমতা বাড়িয়ে নিজেদের তৈরি নতুন একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র জনসমক্ষে প্রকাশ করেছে রাইসি প্রশাসন। দেশটির গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানার মতো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে তাদের ভাণ্ডারে।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, সামরিক দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, জাপান, তুরস্ক, ও ইতালি। তবে ইরানের অস্ত্রভাণ্ডার যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় কম হলেও, তা অনেক শক্তিশালী বলে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

Exit mobile version