রাশিয়ার বিভিন্ন জরিপ বলছে, নির্বাচনে আরও একটি নিরুঙ্কুশ বিজয়ের পথে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দেশটিতে নিজস্ব শাসনব্যবস্থা চালু করায় তিনিই জিতবেন, এমন নিশ্চিত বিষয়টি নিয়ে এতো আয়োজন করে ভোট করার কি দরকার পুতিনের? এমন প্রশ্ন তুলছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলের অনেকেই।
রাশিয়ায় ১৫ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় অনেকটা নিরুত্তাপ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটের মাঠ। বর্তমান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে লড়াইয়ে নামা তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর কেউই পুতিনের জন্য চ্যালেঞ্জ নয়। ফলে ফাঁকা মাঠে একাই গোল দেবেন পুতিন। এমন আভাসই মিলেছে বিভিন্ন জরিপে। ফলে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে পঞ্চম দফায় রাশিয়ার মসনদে বসতে যাচ্ছেন তিনি।
রাশিয়ার স্বাধীন গণমাধ্যম মেদুজার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবারের নির্বাচন ঘিরে অন্তত ৭০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে যাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই ভোট দেবেন পুতিনকে। কিন্তু নির্বাচনে তিনিই জিতবেন, আগে থেকেই বিষয়টি আলোর মতো সত্য হওয়া স্বত্ত্বেও এতো আয়োজন করে নির্বাচনের আদৌ কি প্রয়োজন ছিলো? এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই।পশ্চিমারা একে প্রহসনের নির্বাচন উল্লেখ করে বলছে, নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করছে ক্রেমলিন।
এ অবস্থায় পশ্চিমা গণমাধ্যমসহ বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে, প্রেসিডেন্টকে নিয়ে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ এবং ইউক্রেনে সামরিক অভিযানসহ তার নেয়া সব সিদ্ধান্ত দেশের নাগরিকরা যে সমর্থন করছেন, এ বিষয়গুলো বিশ্বে হাজির করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুতিনের জন্য। এছাড়া নির্বাচনে উচ্চ ভোটার উপস্থিতির হার, ফলাফলের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের প্রমাণের মধ্য দিয়ে পুতিনের সত্যিকারের জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেখাতেই নির্বাচন করা হচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
২৪ বছর আগে বরিস ইয়েলৎসিনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পর থেকে ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার গণমাধ্যম, আদালতসহ সর্বস্তর কঠোর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থেকে সব প্রশাসনিক উপায় ব্যবহার করে, আজীবন রাশিয়ার শাসনভার নেয়ার কৌশল অবলম্বন করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় ইউরোপ থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও এসব পাত্তা না দিয়ে নিজ গতিতে চালাচ্ছেন দেশকে। ক্ষমতা আরও সুসংহত করতেই এ নির্বাচন বলে মনে করছেন অনেকে।
এদিকে নির্বাচনের মধ্যেই পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে মস্কো-কিয়েভ। চলমান নির্বাচনের প্রথম দিন রাশিয়ার বেলগোরোদে হামলা চালায় ইউক্রেনীয় সেনারা। জবাবে ইউক্রেনের বন্দর নগরী ওডেসায় হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা। আবাসিক ভবন, গ্যাস পাইপলাইন ও অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্য করে চালানো বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন।