ইউক্রেনের নিরাপত্তা কেবলই অজুহাত। আফ্রিকায় অবস্থান হারানোই ম্যাক্রোঁর দুশ্চিন্তার মূল কারণ। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে এমনটাই দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার মতে, আধিপত্য হারানোর ভয়েই মস্কোর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে প্যারিসের।
দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। চলমান এ সংঘাতে কিয়েভকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলো। রুশ প্রেসিডেন্টকে দমাতে আরোপ করা হয় কঠোর নিষেধাজ্ঞাও। তবে সব কিছু ছাপিয়ে যুদ্ধের বিষয়ে এবার ফ্রান্সের অবস্থান এবং স্বার্থ নিয়ে ভিন্ন তথ্য দিলেন পুতিন। আর এতেই তৈরি হচ্ছে খবরের শিরোনাম।
গেল কয়েকদিন ধরে চলছে ফ্রান্স-রাশিয়ার কথার লড়াই। সম্প্রতি নিজেদের টেলিভিশনে আলাদা বক্তব্যও দেন দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের জেরে ক্রমেই তিক্ততা বাড়ছে মস্কো-প্যারিস সম্পর্কে।
ম্যাক্রোর দাবি, মস্কো-কিয়েভের যুদ্ধে যদি পুতিনের জয় হয় তবে ইউরোপের কর্তৃত্বে আঘাত আসবে। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহায়তা দিতে হবে। এ সময় কিয়েভের জনগণের জন্য প্যারিসে সীমাহীন সমর্থন দেয়ার কথাও জানান তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন,
শান্তি চাইলে ইউরোপকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। রাশিয়া জিতলে ইউরোপের কোনো নিরাপত্তা থাকবে না। এ সময় পুতিনকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী হিসেবেও অ্যাখা দেন ম্যাক্রোঁ।
তবে কিয়েভের প্রতি ফ্রান্সের এই অকুণ্ঠ সমর্থনকে বাঁকা চোখে দেখছেন ভ্লাদিমির পুতিন। দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে অবস্থান হারানোর ক্ষোভ থেকেই রুশ বিরোধী হয়ে উঠেছেন ম্যাক্রোঁ।
পুতিন বলেন,
আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের নেতারা রুশ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কাজ করার লক্ষ্যে যোগাযোগ করেছেন। কারণ তারা ফ্রান্সের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী নন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন ম্যাক্রোঁ।
গেল কয়েক দশক আফ্রিকার উপনিবেশগুলোয় বাড়ছে ফ্রান্সবিরোধী মনোভাব। এতে অঞ্চলটিতে দেশটির আধিপত্য ও ব্যবসায়িক স্বার্থ ব্যাহত হচ্ছে। জানা গেছে, ২০১০ সালে আফ্রিকায় অর্থনৈতিক প্রকল্প চালু করে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। এরপর থেকেই এ অঞ্চলেকে ঘিরে ধীরে ধীরে অবনতি হচ্ছে দুই রাষ্ট্রের সম্পর্কের।