ভারতে কার্যকর হওয়া বিতর্কিত সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কেনোভাবেই প্রত্যাহার করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সোমবার (১১ মার্চ) ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাস্তবায়ন সম্পর্কিত এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ‘মুসলিমবিরোধী’ বিতর্কিত এ আইনটি কার্যকর করল মোদি সরকার।
এই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা অমুসলিম নাগরিকরা (হিন্দু শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ) ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। তবে মুসলিমদের বিষয়ে আইনে সরাসরি কিছু বলা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইনের মারপ্যাঁচে নাগরিকত্ব হারাতে পারেন দেশটির অনেক মুসলিম নাগরিক।
আইনটি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে ভারতে। বিশেষ করে বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, এই আইন অসাংবিধানিক। এর মধ্যদিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করতে চায় মোদি সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সংবাদ সংস্থা এএনআই’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, ভারতে বসবাসকারী প্রত্যেককে নাগরিকত্ব দেয়া আমাদের সার্বভৌমত্বের অধিকার। এর সঙ্গে কোনো আপোষ করা যাবে না। সিএএ কোনোভাবে প্রত্যাহার করা হবে না।
‘সিএএ অসংবিধানিক’- বিরোধীদের এই দাবি নাকচ করে অমিত শাহ বলেন, তারা সবসময় আর্টিকেল ১৪ (সবার জন্য সমঅধিকার)- এর কথা বলে। তারা ভুলে গেছে যে, এই ধারায় দুটি উপধারা রয়েছে। সিএএ কোনোভাবেই আর্টিকেল ১৪-কে লঙ্ঘন করে না। এ বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। কেবলমাত্র যারা ওই তিন দেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন, তাদের জন্য এই আইন। এটা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। ভারতের শীর্ষ আদালতে এই আইনের ওপরে কোনো স্থগিতাদেশ নেই।
সিএএ’র সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এনআরসির সঙ্গে সিএএ’র কোনো সম্পর্ক নেই। আসামসহ গোটা দেশে সিএএ চালু হচ্ছে। কিন্তু উত্তর-পূর্ব ভারতের যে রাজ্যগুলোতে, যেখানে নাগরিকদের জন্য দুটি বিশেষ অধিকার দেয়া রয়েছে; এসব জায়গায় সিএএ আইন চালু হবে না।