আকাশ থেকে গাজাবাসীকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা খাবারের প্যাকেট নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। এবার তাতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বলা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক হাতে বোমা আর অন্য হাতে খাবার ফেলছেন গাজাবাসীর ওপর।
সম্প্রতি বাইডেনের নিজ দলের ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট নেতা ও রিপ্রেজেন্টেটিভ রো খান্না এ মন্তব্য করেছেন। এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, একই সঙ্গে গাজাবাসীকে ত্রাণসহায়তা ও তাদের ওপর হামলার জন্য ইসরাইলকে বোমা দেয়া এক অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব।
মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের খবরেও উঠে আসে এ ধরনের বিশ্লেষণ। এতে বলা হয়, বাইডেন প্রসাশন একদিকে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে তেল আবিবের পাশে থাকছে আবার এসব অস্ত্রের হামলায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের জন্যও মায়া দেখাচ্ছে।
ওয়াশিংটনের আরব সেন্টারে ফিলিস্তিন-ইসরাইল প্রোগ্রামের প্রধান ইউসেফ মুনায়ের বলেন, ‘এর কোনো অর্থ নেই। এটা অনেকটা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুন এক কাপ পানি দিয়ে নেভানো এবং একইসঙ্গে যে আগুন জ্বালিয়েছে তাকে আরও জ্বালানি সরবরাহ করা।
গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে এরইমধ্যে ব্যাপক নিন্দা কুড়িয়েছেন বাইডেন। দিন যত যাচ্ছে, তত তীব্র হচ্ছে নিন্দার মাত্রা। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে একদিকে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক অপরদিকে নিজ দেশের জনমত ধরে রাখতে গিয়ে উভয় সংকটে পরে অনেকটা যেন খেই হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
ইসরাইল অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ‘যুদ্ধপরাধ’ ও ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর উদ্বেগ উপেক্ষা করেছে বাইডেন প্রশাসন। এছাড়া সম্প্রতি ইসরাইলকে ১৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি নিরাপত্তা সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মার্কিন সিনেট। এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বানও প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি যুদ্ধবিরতিতে জাতিসংঘের চেষ্টাকেও ভেটো দিয়ে আটকে দেয় তারা।
ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাউ নামের ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাঙ্কের মতে, বাইডেন চাইলে এখনো সমালোচনা থেকে বাঁচতে পারেন, যদি তিনি ইসরাইলি হামলা বন্ধের পদক্ষেপ নেন। তবে বাইডেন কি সেই পদক্ষেপ নেবেন? কিংবা পদক্ষেপ নিলেও নেতানিয়াহু কি তাঁর কথা শুনবেন কিনা? তা দেখার অপেক্ষায় বিশ্ববাসী।