দেশের ফুটবলে দীর্ঘ সাফল্যখরা কেটেছে নারী ফুটবলারদের হাত ধরেই। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জেতার পর থেকে আর মাত্র একবারই ফাইনাল খেলতে পেরেছে ছেলেদের সাফ দল। অথচ নারীদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা তো জিতেছেই, বয়সভিত্তিক সাফেও বাঘিনীদের জয়জয়কার। সবশেষ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
চাপের মুখে বাংলাদেশকে কমবেশি সব খেলাতেই ভেঙে পড়তে দেখা যায়। নারীদের ফুটবলকে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ধরা যায়। একাধিকবার চাপের মুখে জয় ছিনিয়ে আনতে দেখা গেছে বাংলার বাঘিনীদের। বয়সভিত্তিক সাফে আরও একবার এই উদাহরণ দেখিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। এরপর স্নায়ুক্ষয়ী টাইব্রেকার জিতে শিরোপা ঘরে তুলেছে বাঘিনীরা।
শিরোপা জেতার পর গতকাল সোমবার (১১ মার্চ) অনেকটা নিভৃতেই দেশে ফিরেছে বাংলার মেয়েরা। ২০২২ সালে নারী জাতীয় দল নেপালের কাঠমান্ডু থেকে সাফের শিরোপা জিতে দেশে ফিরে পেয়েছিল অভূতপূর্ব সংবর্ধনা । খোলা বাসে করে বিমানবন্দর থেকে ফুটবল ফেডারেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মেয়েদের। উৎফুল্ল দেশবাসী তাদের বরণ করেছিল ফুলেল শুভেচ্ছায়।
এবারও অনূর্ধ্ব-১৬ দল সাফ জিতে ফিরেছে নেপালের মাটি থেকেই। তবে তাদের কপালে জোটেনি পূর্বসূরিদের মতো রাজসিক সংবর্ধনা। বাফুফের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েই কাজ সারা হয়ে গেছে। তবে এই মেয়েদের বরণ করতে বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ ছাড়া বাফুফের অন্য কোনো শীর্ষ ব্যক্তিকে দেখা যায়নি।
তবে সাফজয়ী মেয়েদের পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সকল চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের ডেকে দেখা করবেন বলেও জানিয়েছেন।
যে মেয়েদের হাত ধরে এসেছে সাফের শিরোপা, দেশে ফেরার সময় তাদের হাতেই ছিল না সেই ট্রফি। বিশ্ব ফুটবলে কোনো দল শিরোপা জিতে দেশে ফিরলে ট্রফি সাধারণত সেই দলের অধিনায়ক, কোনো খেলোয়াড় বা কোচের হাতে থাকে। অথচ দেশে ফেরার পর যখন মেয়েদের বরণ করে নেয়া হয় ট্রফি শোভা পাচ্ছিল ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবুর হাতে। এমনকি গণমাধ্যম কর্মীরা যখন ছবি তোলার জন্য ট্রফি অধিনায়কের হাতে দিতে বলেন, তখনও তা নিজের কাছেই রাখেন তিনি। যা জন্ম দিয়েছে সমালোচনার।
নারী জাতীয় দল সাফ জিতে দেশে ফেরার পর বাফুফের পক্ষ থেকে নানাভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। অনূর্ধ্ব ১৬ নারী দলের জন্য তাৎক্ষনিক কোনো পুরস্কারের ঘোষণা না দিলেও বাফুফে অবশ্য তাদের সংবর্ধনা দেবে বলে জানিয়েছে।