ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ৮ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ কোটি রুপিরও বেশি। তার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বর্তমান বাজারমূল্য ১৭ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপির বেশি। মুকেশ আম্বানির পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাই পরিচালনা করেন এই কোম্পানি।
অনেকেই মনে করেন, রিলায়েন্স থেকে সবচেয়ে বেশি বেতন পান আম্বানি পরিবারের কোনো সদস্য। কিন্তু বাস্তব চিত্র পুরোপুরি আলাদা। রিলায়েন্সের সর্বোচ্চ বেতনধারী কর্মকর্তার নাম নিখিল মেসওয়ানি। মুকেশ আম্বানির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ নিখিলের বর্তমান বেতন ২৪ কোটি রুপি। তবে জেনে অবাক হবেন যে, নিখিলের বাবা রসিকভাই মেসওয়ানি ছিলেন মুকেশের চাকরি জীবনের প্রথম বস।
রিলায়েন্সের মালিক মুকেশ আম্বানিকে ব্যবসার দুনিয়ায় নিয়ে আসেন তার বাবা তথা শিল্পপতি ধীরুভাই আম্বানি। ওই সময় রিলায়েন্সের কোনো কিছুই জানতেন না মুকেশ। ওই অবস্থায় তাকে ধরে সবকিছু শেখান রসিকভাই মেসওয়ানি।
এই রসিকভাই ছিলেন ধীরুভাই আম্বানির ভাগনে। তিনি রিলায়েন্সের মূল পরিচালকদের একজন ছিলেন এবং মুকেশকে গাইড করার জন্য তাকে নিযুক্ত করা হয়েছিল। সম্প্রতি, একটি সাক্ষাৎকারে তার প্রথম জীবনের কাজ শেখার গল্প বলেছেন মুকেশ আম্বানি। সেখানে কীভাবে ধীরুভাই আম্বানি রসিকভাইকে তার মেন্টর হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন, তা তুলে ধরেন তিনি।
মুকেশের কথায়, ‘বর্জিং পলিয়েস্টার বিভাগ দিয়ে রিলায়েন্সের ব্যবসায় হাতে খড়ি হয়েছিল আমার। যার সুপারভাইজার ছিলেন রসিকভাই মেসওয়ানি। সবকিছু তার কাছে গিয়ে রিপোর্ট করতাম।’
এখন রসিকভাই মেসওয়ানির ছেলে নিখিল মেসওয়ানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সর্বোচ্চ বেতনভোগী কর্মচারী। নিখিল ১৯৮৬ সালে রিলায়েন্সে যোগদান করেন এবং ১৯৮৮ সালের ১ জুলাই থেকে কোম্পানির বোর্ডে নির্বাহী পরিচালকের পদবি নিয়ে সার্বক্ষণিক পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি মুকেশ আম্বানির মতোই প্রকল্প কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। তার প্রথম লক্ষ্য পেট্রোকেমিক্যাল ডিভিশন, তিনি পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে রিলায়েন্সকে একটি বৈশ্বিক পাওয়ার হাউস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
নিখিল মেসওয়ানি রিলায়েন্সের মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্চাইজি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, ইন্ডিয়ান সুপার লিগ এবং কোম্পানির অন্যান্য ক্রীড়া উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত।
তবে মজার বিষয় হলো মুকেশ আম্বানি ভারতের অন্যতম বড় কোম্পানির নেতৃত্ব দিলেও কোনো বেতন পান না। কোভিড-১৯ মহামারির আগে অবশ্য তিনি বার্ষিক ১৫ কোটি রুপি বেতন নিতেন।