Homeসর্বশেষ সংবাদ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী রেজিম যারা আছে তারা ক্যু করেছে

৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী রেজিম যারা আছে তারা ক্যু করেছে

ইসমাইল ইমন, চট্টগ্রাম ব্যুরো।।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী রেজিম যারা আছে তারা ক্যু করেছে। এটা হচ্ছে মিলিটারি ক্যুর মতো। এটাকে আমরা নির্বাচন বলতে পারি না, এটাকে আমরা বলি গণভোট। কারণ নির্বাচনে সাধারণ জনগণ অংশগ্রহণ করেনি। আমরা বলেছি যাবেন না, জনগণ যায়নি। তারা বলেছে না গেলে ভাতা কেটে নেবে। হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারপরও তো জনগণ যায়নি। ৯৫ শতাংশ মানুষ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপরেও কেউ ক্ষমতা দখল করে থাকতে চাইলে সেটা তাদের বড় সমস্যা।

তিনি সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সেহেরী ও ইফতার সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।

আমীর খসরু বলেন, জনগণকে সকল নির্বাচনের প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে ও তাদের ভোট কেড়ে নিয়ে যখন জোর করে বারবার ক্ষমতা দখল করবেন, তখন আপনার মুখ দিয়ে যা ইচ্ছে আপনি বলতে পারবেন। জনগণ তখন কি ভাবছে বা কি করছে অথবা কি চাইছে তখন সেটা আর বিবেচ্য থাকে না। কারণ যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি তারা তো অবৈধ সরকার। তাদের যা ইচ্ছে তারা সেটাতো বলতে পারবে। কারণ তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই, জবাবদিহি নেই।

তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন ও কর্মসূচি চলমান আছে। যতদিন বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরে না পাবে এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কেউ যদি মনে করে জনগণকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে ক্যু করে ক্ষমতা দখল করে টিকে থাকতে পারবে এর চেয়ে বড় ভূল আর কিছু নেই।

তিনি বলেন, এমন সময়ে এ ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে যখন বাংলাদেশের পাঁচ কোটির ওপরে মানুষ আজ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এসময়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এ উদ্যোগ কিছু মানুষের জীবনে অন্তত স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে। অন্তত কয়েক বেলা তারা খেতে পারবে, ইফতার করতে পারবে। বিএনপির কাজ এরকমই হতে হবে। বিএনপি মানে জনগণ, জনগণ মানে বিএনপি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী ও মুক্তিকামী জনগণ বিগত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এখানে আজ অনেক গরীব মানুষ এসেছেন। আপনাদেরকে বলা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রে না যান তাহলে আপনাদের ভাতা কেটে নেওয়া হবে। আপনারা অভাবী মানুষ। আপনাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে তবুও আপনারা ভোটকেন্দ্রে যাননি। আপনারা গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির সংগ্রামে ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। এজন্য বিএনপি ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

আমীর খসরু বলেন, ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে আপনারা গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অভাব থাকা সত্ত্বেও, সন্ত্রাসী ও পুলিশ দিয়ে হুমকি দেওয়া সত্ত্বেও আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাননি। এটা হচ্ছে গণতন্ত্রের বিজয়। এটা আমাদের আন্দোলনের সুফল। যে আন্দোলনে আমাদের শত শত নেতাকর্মী নিহত হয়েছে, লাখ লাখ নেতাকর্মী ঘরছাড়া হয়েছে, জেলে গিয়েছে। এত সমস্যার মধ্যেও আমাদের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করে গেছেন। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সঙ্গে ছিলেন। এটাই বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের আত্মা ফিরিয়ে দিতে হবে।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিজের যন্ত্র বানিয়ে ক্ষমতায় থাকা যায়, কিন্তু মানুষের মন জয় করা যায় না। বিএনপি নেতাকর্মীরা মানুষের হৃদয়ে। বিএনপি বিগত ১৭ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে। এর উপরে সরকারের দমন, নিপীড়ন ও হামলা, মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা এখন নিঃস্ব প্রায়। তারপরও জনগনের দল হিসিবে বিএনপি নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে থাকে। আর জনবিরোধী সরকারের জনগণের জন্য কোনো মায়া নেই। কারণ তাদের তো জবাবদিহি করতে হয় না। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সারাদেশের মানুষের এমনিতেই নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এরমধ্যে দফায় দফায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে আওয়মী সরকার।

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বর্তমানে বাজারে চাল, ডাল, তেল, পিয়াজ, মরিচ, গুঁড়ো দুধ, শাকসবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামে সাধারণ মানুষ অসহায়। সবজি সহ প্রত্যেকটি জিনিস এই ভরা মৌসুমে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দাম বৃদ্ধি সরকারের গণবিরোধী নীতির প্রকাশ। জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে এই ধরনের সীমাহীন দাম বৃদ্ধি পেতো না। এই দাম বৃদ্ধির পেছনে আওয়ামীলীগের অনৈতিক সিন্ডিকেট কাজ করছে।

এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস এম সাইফুল আলম, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য এস এম আবুল ফয়েজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, মো. কামরুল ইসলাম, থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, হাজী মো. সালাউদ্দীন, মো. সেকান্দর, থানা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, মাঈনুউদ্দীন চৌধুরী মাঈনু, মহানগর বিএনপি নেতা নুরুল আকবর কাজল, অধ্যাপক জন্টু বড়ূয়া, মো. ইদ্রিস আলী, আলী আজম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য সাইফুর রহমান শপথ, মহানগর মহিলাদলের সি. সহ সভাপতি ছকিনা বেগম, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এস এম মফিজ উল্লাহ, আবদুল্লাহ আল ছগির, মো. ইলিয়াছ, আলী আব্বাস খান, রফিক উদ্দিন চৌধুরী, হুমায়ুন কবির সোহেল, মোশারফ জামাল, ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহম্মেদ, এম এ হালিম বাবলু, হাজী আবু ফয়েজ, মনজুর মিয়া, জিয়াউর রহমান জিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, মনজুর কাদের প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর