শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালটি এখন মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য। প্রকাশ্যে ওয়ার্ডে বসেই সেবন করছে মাদক, গায়ের জোরে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রকার নেশাজাতীয় ঔষধ। দায়িত্বরত নার্স ও ওয়ার্ডবয়রা বাঁধা দিলেই তাদেরকে দিচ্ছে জীবননাশের হুমকি। যদিও ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বরাবরে চিঠি দিয়েই দায়িত্ব এড়াচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শেরপুর ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণ করছে স্থানীয় মাদকসেবী বখাটেরা। বাধা দিতে গেলেই শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়, এমনকি জীবননাশের হুমকিও দিচ্ছে এই মাদকসেবীরা। তাই এদের ভয়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত ছোট-বড় সবাই থাকে আতঙ্কে।
শুধু তাই নয়, নেশার অর্থ যোগাতে হাসপাতাল থেকেই চুরি করছে ঘুমের ঔষধ, ক্যানোলো, সিরিঞ্জ ও স্যালাইনসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী। অনেক সময় সুযোগ বুঝে রোগী বা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা-পয়সাও ছিনতাই করছে তারা। আর ছিনতাইয়ে সুবিধা করতে না পারলে নার্স ও ওয়ার্ড বয়দের কাছ থেকে জোর করে আদায় করছে নগদ অর্থ। এদের দৌরাত্ম্য থেকে রক্ষা পেতে হাসপাতালে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সাহায্য চান এখানকার কর্তব্যরতরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নার্স ও ওয়ার্ড বয়রা জানায়, মাদকসেবীরা এতটাই ভয়ঙ্কর যে, কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পান না। তাদের বাধা দিতে গিয়ে এরইমধ্যে কয়েকজনকে মারধর করার ঘটনাও ঘটেছে। আর বিষয়টি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। স্থানীয় এই মাদকসেবীদের ভয়ে কর্তব্যরতরা সারাক্ষণ তটস্থ থাকেন। কখন কে তাদের খারাপ আচরণের শিকার হন এই আতঙ্কে সময় কাটে এখানকার নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. জসিম উদ্দিন সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমরা মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন এবং র্যাবের বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নিবেন।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, প্রতিদিন গড়ে এই হাসপাতালের আউটডোরে প্রায় ৮০০ এবং ৪ শতাধিক রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন।