বিদ্রোহীদের হাতে একের পর এক ঘাঁটি হারিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের জান্তা সেনারা। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে বিমান হামলার পাশাপাশি গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে তারা। এ অবস্থায় বাংলাদেশের পর এবার চীনা সীমান্তে গিয়ে পড়লো জান্তা বাহিনীর বোমা।
সংবাদমাধ্যম ইরাবতির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চীনের সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য কাচিনে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জান্তা বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) ও তাদের মিত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জান্তার এই সংঘর্ষ চলছে।
কেআইএ’র কাছে ১০টি ফাঁড়ি এবং দুটি ঘাঁটি হারিয়েছে সামরিক জান্তার সেনারা। বিদ্রোহীদের কাছে এ হারের পর রাজ্যের বিভিন্ন শহরে বিমান ও বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে জান্তা বাহিনী। করা হচ্ছে বোমাবর্ষণও। একইসঙ্গে টার্গেট করে সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনও চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এ অবস্থায় প্রাণ বাঁচাতে শহর ছেড়ে পালাচ্ছেন মানুষ।
কেআইএ’র সদর দফতরে ফেলা বোমা আঘাত করেছে চীনের সীমান্তে। স্থানীয়দের বরাতে ইরাবতি জানায়, অন্তত তিনটি বোমা চীনা অঞ্চলে গিয়ে আঘাত করে। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি বেইজিং। তবে, অঞ্চলটির বাসিন্দারা এ ঘটনার পরপরই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
কেআইএ’র সদর দফতর লাজিয়ায়। সেখানেকার একজন বাসিন্দা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই এলাকায় জান্তা সৈন্যদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের তীব্র লড়াই চলছে। শুক্রবার সকাল থেকে জান্তা সেনারা শহরের আবাসিক এলাকায় গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, জান্তার সামরিক বাহিনী বেসামরিক লোকদের টার্গেট করছে, তাই বেশিরভাগ বাসিন্দা শহর ছেড়ে পালানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
২০২১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২শর বেশি সাংবাদিককে আটক করেছে সামরিক জান্তা। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মিয়ানমারে হাজার হাজার নারী রাজনৈতিক বন্দী অবস্থায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস কাটিয়েছেন।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির দলকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে জেনারেল মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই তাদের বিরুদ্ধে লড়ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। যদিও গত অক্টোবরে বিদ্রোহীরা একযোগে আক্রমণ শুরু করে। হারাচ্ছে একের পর এক সেনা ঘাঁটি। এ অবস্থায় যতই দিন যাচ্ছে, ততই তাদের আক্রমণ তীব্র হচ্ছে। এতে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জান্তা বাহিনী।