ক্ষমতাসীন জান্তাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে লড়াইয়ের কারণে মিয়ানমারের যেসব নাগরিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটি। এরইমধ্যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর থেকে প্রথম দফায় বেশ কয়েকজনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৮ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক এক টুইটে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।
তিনি বলেন,
মিয়ানমারের যেসব নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ (শুক্রবার) প্রথম দফায় তাদের কয়েকজনকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। কিন্তু তারপরও মানবিক বিবেচনায় দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের বিপদগ্রস্ত নাগরিকদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়েছে ভারত সরকার।’
ভারতের মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল ও নাগাল্যান্ড রাজ্যের সঙ্গে প্রায় ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার সীমান্ত আছে। নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের দিক থেকেও মিয়ানমারের জনগণ ও ভারতের এই চার রাজ্যের জনগণ নৃতাত্ত্বিক পরিচয় বেশ কাছাকাছি।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সু চি’র দলকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে জেনারেল মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই দেশটির বিভিন্ন জায়গায় জোরালো হতে থাকে জান্তাবিরোধী প্রতিবাদ-বিক্ষোভ।
তবে সময়ের ব্যবধানে পাল্টাতে থাকে সেই চিত্র। বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের শক্তি আরও বাড়িয়ে পুরো দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে মিয়ানমার পরিস্থিতি।
দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের সঙ্গে সীমান্তবর্তী প্রদেশে সামরিক সরকারের লড়াই এখন তুঙ্গে। বিদ্রোহীদের হামলায় শান ও রাখাইন প্রদেশে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সামরিক জান্তা। এমনকি রাখাইনে আরাকান আর্মি যেভাবে শক্তি বাড়িয়ে বিভিন্ন এলাকা দখল করে নিচ্ছে, এতে বিচলিত হয়ে পড়েছে মিয়ানমার সরকার।
সংঘাতের আঁচ থেকে সীমান্তবর্তী চার রাজ্যকে মুক্ত রাখতে গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার থেকে তার বাস্তবায়ন শুরু হলো।