সুমাইয়া উশাহ। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার ১১ বছর বয়সের এক শিশু। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে সাংবাদিক হবে। কিন্তু গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলার কারণে এ বয়সেই সে হাতে তুলে নিয়েছে মাইক, জীবন বাজি রেখে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরছে ইসরাইলি বর্বরতার খবর।
সম্প্রতি কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সুমাইয়া বলে, আমি সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে বাইরে বের হই। যুদ্ধের আগেও আমি সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। বিশ্বের সামনে নিজেকে প্রমাণ করতে চাইতাম। সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ আমার রোল মডেল। আমি নিজেকে তার মতো করে বিশ্বের সামনে প্রমাণ করতে চাই।
শিরিন আবু আকলেহ আল জাজিরার সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ সালে পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে তিনি নিহত হন। তার নির্ভিক চরিত্রই সুমাইয়ার কাছে তাকে রোল মডেল করে তুলেছে।
ইসরাইলের বোমা হামলার মধ্যে বাইরে যেতে ভয় হয় কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সুমাইয়া বলে, আমি যখন বাইরে যাই, তখন আমার মা-বাবাকে বলি, আমি বাইরে যাচ্ছি। আমি সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রাখি। আমি জানি যে, আমি যাওয়া বা আসার পথে কিংবা রিপোর্টিং করার সময়ও ইসরাইলের হামলার শিকার হতে পারি।
বিশ্ববাসীর উদ্দেশে সুমাইয়া বলে, আমি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। আর শিশুদের জন্য গাজা উপত্যকায় আরও বেশি মানবিক সহায়তা সরবরাহের দাবি জানাই।
ইসরাইলের অব্যাহত হামলা ও নির্বিচার গণহত্যার মধ্যে রিপোর্টিং চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর সুমাইয়া। এই দৃঢ় সংকল্পের কারণে সে বিশ্ববাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে ও প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন ৭১ হাজারেরও বেশি। এছাড়া উপত্যকাটিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ১২০ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।