ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেছেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের আগে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নোটিশ দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। দুর্ঘটনার পর তারা এখন একতরফাভাবে ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করছে। শুধু নোটিশ দিয়ে তারা কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না।
শনিবার (২ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন এফবিসিসিআই সিনিয়র সহসভাপতি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। যেখানে বেসরকারি খাতের অবদান উল্লেখযোগ্য। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে শতভাগ কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়নে দেশ এখনও পিছিয়ে রয়েছে। বেইলি রোডে ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একে অন্যকে দোষারোপ না করে বাণিজ্যিক ভবনসহ সব ধরনের স্থাপনায় নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বাস্তবায়নে সরকার এবং বেসরকারি খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
মো. আমিন হেলালী আরও বলেন, এই দুর্ঘটনা যাদের অবহেলায় হয়েছে তাদের প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যাদের অবহেলার কারণে এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল তাদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা ব্যবসায়ী হোক কিংবা ভবনের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত ও তদারকির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান হোক; প্রকৃতঅর্থে যাদের অবহেলায় ও উদাসীনতার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তাদের প্রত্যেককে কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি ভবনের কমপ্লায়েন্সের বিষয়গুলো তদারকির সাথে সংশ্লিষ্টদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডকে মানব সৃষ্ট সংকট হিসেবে উল্লেখ করে আমিন হেলালী বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে এখন থেকেই যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে।
একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের আগে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নোটিশ দিয়েছিলো একটি প্রতিষ্ঠান। দুর্ঘটনার পর তারা এখন একতরফাভাবে ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করছে। কেবলমাত্র নোটিশ দিয়ে তারা দায় এড়াতে পারে না। দুর্ঘটনার আগেই আইনি পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ তাদের ছিল। সেটি না করে তারা তখন উদাসীন ছিল। এখন একতরফা দোষ চাপানো হচ্ছে ব্যবসায়ীদের ওপর।
কোন ব্যবসায়ী যদি প্রকৃতঅর্থে দোষী হয়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা যেমন নিতে হবে; পাশাপাশি যারা ভবনের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত না করে উদাসীনতা দেখিয়েছে, অলসতা দেখিয়েছে; তাদেরও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে বলেও জানান মো. আমিন হেলালী।
তিনি বলেন, বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে কমপ্লায়েন্সের সার্টিফিকেট দেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ভবনগুলো ভালোভাবে বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দিতে হবে। যেসব জায়গায় দুর্বলতা আছে সেগুলোকে চিহ্নিত করে পরবর্তীতে যেন একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার প্রমুখ।