Homeআন্তর্জাতিকভারতীয় গণমাধ্যমে সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী নীতা আম্বানি

ভারতীয় গণমাধ্যমে সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী নীতা আম্বানি

ভারতের সবচেয়ে ধনী মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানি। রুপে-গুণে কোনো নায়িকার চেয়ে কম নন ৬০ বছর বয়সী এই নারী। মাত্র কয়েক মাস আগে সমাজসেবায় মনোনিবেশ করার জন্য ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যমের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের একটি যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রি ও যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ডিজনি। এর মাধ্যমে ৭৫ কোটি দর্শকের কাছে পৌঁছাতে চায় তারা।

এই যৌথ উদ্যোগের চেয়ারপারসন হবেন আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানি। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডিজনি ভারতে তাদের ডিজিটাল স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ও ১০০টির বেশি টেলিভিশন চ্যানেলকে একত্র করেছে।

তবে নীতা আম্বানি একাই এই মিডিয়া জায়ান্ট পরিচালনা করবেন না। এই যৌথ উদ্যোগের ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন ডিজনির এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিটের সাবেক সভাপতি উদয় শঙ্কর। এছাড়া তিনি এর কৌশলগত দিক নির্দেশনাও দেবেন। ডিজনি-রিলায়েন্স চুক্তিটি ২০২৪ সালের শেষের দিকে বা ২০২৫ সালের প্রথম দিকে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

১০ বছর আগে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বোর্ডের প্রথম নারী পরিচালক হয়ে ব্যবসায় জগতের নজর কাড়েন নীতা আম্বানি। গত বছরের আগস্টে তিনি তার এ পদ থেকে সরে দাঁড়ান। সে সময় এক বিবৃতিতে কোম্পানি জানায়, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের সমাজসেবামূলক কাজে মনোনিবেশ করার জন্য তিনি পদত্যাগ করছেন।

নীতা আম্বানির এরই মধ্যে খেলাধুলা পরিচালনা ও বড় প্রকল্প পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) জনপ্রিয় দল ‘মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স’-এর মালিক।

অন্যদিকে ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে তুলে ধরা ও বজায় রাখার জন্য গত বছর মুম্বাইতে নীতা মুকেশ আম্বানি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা হয়।

২০২৩ সালের মে মাসে ‘দ্য সাউন্ড অফ মিউজিক’ নামের ব্রডওয়ে শো ভারতে নিয়ে আসে এই সংস্কৃতিক কেন্দ্র। এছাড়া নীতা আম্বানি বর্তমানে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সদস্য এবং নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট বোর্ডের ট্রাস্টি।

ডিজনি-রিলায়েন্সের এই যৌথ উদ্যোগের চেয়ারপারসন হিসেবে ভারতীয় মিডিয়া ও বিনোদন বিভাগের সবচেয়ে শক্তিশালী নারী হয়ে উঠছেন নীতা আম্বানি।

এই যৌথ উদ্যোগের ৬৩ শতাংশেরও বেশি শেয়ারের মালিক হবে রিলায়েন্স। যার মধ্যে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ সরাসরি ও ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভায়াকম ১৮-এর মাধ্যমে। আর বাকি মালিকানা থাকবে ডিজিনির হাতে।

১৯৮৫ সালে মুকেশ আম্বানিকে বিয়ে করেন নীতা। তাদের তিন সন্তান; এক মেয়ে ইশা এবং দুই ছেলে অনন্ত ও আকাশ। সন্তানরা সবাই পারিবারিক ব্যবসাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যদিও মুকেশ আম্বানি ২০২২ সালে উত্তরাধিকার পরিকল্পনা তৈরি করার সময় বলেছিলেন, শীঘ্রই তার অবসর নেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।

গত বছর ভারতের কর্পোরেট জগতে নারীদের বিষয়ে কথা বলার সময় এক টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে নীতা আম্বানি বলেন, আমি কখনোই ইশা, আকাশ ও অনন্তের মধ্যে পার্থক্য করিনি। আমার ছেলেরা যা করতে পারে, আমার মেয়েও তাই করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নারীরা সব ধরণের বাধা পেরিয়ে আসছে। তাদের সুযোগ দিন, তারা অবশ্যই ভবিষ্যত উজ্জ্বল করবে।

কর্পোরেট জগতে নারী পুরুষের সমান বেতন হওয়া প্রয়োজন বলেও জানান নীতা। গত কয়েক দশকে ভারতীয় কোম্পানিগুলোতে নারী প্রতিনিধিদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

আইনি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং-এর ২০২২ সালের তথ্যানুসারে, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত শীর্ষ ৫০০ কোম্পানিগুলোর প্রায় ৯৫ শতাংশেরই একজন নারী বোর্ড মেম্বার আছে; যা ২০১৭ সালে ছিল ৬৯ শতাংশ। তবে হতাশার বিষয় হলো, ৫ শতাংশেরও কম কোম্পানিতে নারী চেয়ারপারসন রয়েছে।

Exit mobile version